ইউএস ওপেন ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন ‘টাইগার সাবালেঙ্কা”

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:১৯

আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:২০

শেয়ার

ইউএস ওপেন ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন ‘টাইগার সাবালেঙ্কা”
বর্ণালী রাতে ইউএস ওপেন ২০২৫ শিরোপা হাতে আরিনা সাবালেঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত।

ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে বৃষ্টির দাপটে থমকে যায় আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম। ছাদ টেনে নামানো হয়, কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থেমে গেলেও শুরু হলো ভিন্ন এক ঝড় কোর্টে আরিনা সাবালেঙ্কার ঝড়। দুর্দান্ত শুরুতে প্রথম সেট সহজেই নিজের করে নিলেন তিনি। দ্বিতীয় সেটে লড়াই জমলেও সাবালেঙ্কাকে থামাতে পারেননি আমেরিকান প্রতিদ্বন্দ্বী আমান্দা আনিসিমোভা। অবশেষে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে স্বপ্নের শিরোপা জিতে উল্লাসে ভেসে গেলেন সাবালেঙ্কা, যিনি এর আগে দুইটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে হেরে ছিলেন।

 

নিজেকে সবসময় ‘টাইগার’ ভাবতে ভালোবাসেন সাবালেঙ্কা। হাতে আঁকা বাঘের ট্যাটুও যেন তার সেই মানসিকতার প্রতীক। ফাইনালে সেটিই মেলে ধরলেন তিনি। ৬-৩, ৭-৬ (৩) গেমে আনিসিমোভাকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ইউএস ওপেন জিতলেন বিশ্বের এক নম্বর তারকা। এটাই তার শততম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়।

 

সেরেনা উইলিয়ামসের পর দীর্ঘ ১১ বছর কেউ পারেননি টানা দুটি ইউএস ওপেন জিততে। এবার সেই কীর্তি গড়লেন সাবালেঙ্কা। ২০২৩ ও ২০২৪ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনসহ তার চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামই এসেছে হার্ড কোর্টে। ২০২২ সাল থেকে এই মঞ্চে ফাইনালের আগে থামেননি তিনি।

 

তবে পথটা সহজ ছিল না। এই বছর অস্ট্রেলিয়ান ও ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হেরেছেন, উইম্বলডনের সেমিতে থেমেছেন ঠিক এই আনিসিমোভার কাছেই। মানসিক চাপ ছিল বিশাল। তাই ফাইনালে নামার আগে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন ভিন্নভাবে। আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রতিটি পয়েন্টের জন্য লড়াই করার মানসিকতাই তাকে এগিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করলেন সাবালেঙ্কা।

 

ম্যাচ পয়েন্টে গিয়ে সামান্য ভুলে ব্রেক হারালেও শেষ পর্যন্ত শান্ত থাকতে পেরেছেন তিনি। সেই মুহূর্তের অভিজ্ঞতা নিয়ে বললেন, “একটা সময় মনে হচ্ছিল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি। কিন্তু নিজেকে বলেছি, ‘না, এখন থামা যাবে না। সব ঠিক আছে।’ গভীর শ্বাস নিয়ে এগিয়েছি পরের পয়েন্টে।”

 

কঠিন পথ পেরিয়ে জেতার আনন্দই তার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। সাবালেঙ্কার ভাষ্যে, “এই জয়টা অন্যরকম। মনে হচ্ছে অনেক কিছু পার হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রাপ্যটুকু পেয়েছি। এভাবেই নিজের টেনিস ও মানসিক দৃঢ়তা প্রমাণ করতে পেরে আমি গর্বিত।”

 

অন্যদিকে আনিসিমোভার জন্য ছিল হতাশার রাত। প্রথমবার উইম্বলডনের ফাইনালে উঠে হেরেছিলেন, এবার হার ইউএস ওপেনের ফাইনালে। মানসিক অবসাদ কাটিয়ে কোর্টে ফিরে দুর্দান্ত অগ্রগতি করলেও শিরোপার স্বাদ এখনও ধরা দিল না তার হাতে। তবু ক্যারিয়ারের সেরা র‌্যাঙ্কিংয়ে পৌঁছানো তার জন্য বড় সান্ত্বনা।

 

হারের পর চোখে জল নিয়ে তিনি বললেন, “দারুণ মৌসুম কেটেছে। দুটি ফাইনালে ওঠা সহজ কিছু নয়। কিন্তু হারটা খুব কষ্টের। স্বপ্নের কাছাকাছি গিয়েও ছুঁতে না পারাটা কঠিন।”

 

তবে প্রতিদ্বন্দ্বীকে কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি আনিসিমোভা, “আরিনা অবিশ্বাস্য। প্রতিবারই কোর্টে নামলে তার শ্রেষ্ঠত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি যা অর্জন করেছেন, তা মুগ্ধ করার মতো।”