নারী অ্যাথলেটিকসে অংশ নিতে বাধ্যতামূলক হল জিন পরীক্ষা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই, ২০২৫ ২০:২০
আপডেট: ৩১ জুলাই, ২০২৫ ২০:২১
শেয়ার
ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্সের নারী বিভাগে চালু হল কঠোর নিয়ম। ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও অন্যান্য শীর্ষ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নারী বিভাগে অংশ নিতে এবার থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ‘জৈবিক নারী’ প্রমাণে এককালীন জিন পরীক্ষা করতে হবে—এমনই নতুন নিয়ম ঘোষণা করেছে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স। সংস্থাটির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হচ্ছে এই নিয়ম, যার প্রথম প্রয়োগ হবে ১৩ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া টোকিও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে।
এই পরীক্ষায় অ্যাথলেটদের এসআরওয়াই জিন আছে কি না, সেটি নির্ধারণ করা হবে। এই জিন ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোমে অবস্থান করে এবং সাধারণভাবে জৈবিক পুরুষত্বের ইঙ্গিত দেয়। ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স জানিয়েছে, এই ‘একবারের পরীক্ষাটি’ করা যাবে গাল থেকে স্যাম্পল নেওয়া সোয়াব বা শুকনো রক্ত বিন্দুর মাধ্যমে। সদস্য রাষ্ট্রের অ্যাথলেটিক্স সংস্থাগুলো পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবে, আর পরীক্ষার খরচ বাবদ ১০০ ডলার পর্যন্ত বহন করবে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স।
সংস্থার প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান কো স্পষ্ট করেই বলেছেন, “নারী বিভাগে অংশ নিতে হলে অ্যাথলেটদের জৈবিক নারী হতে হবে—এটাই আমরা বলছি। এটা নিশ্চিত করার জন্যই এই জিন পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি আরও বলেন, “নারীরা যেন এমন এক খেলায় প্রবেশ করেন, যেখানে জৈবিক প্রতিবন্ধকতার অনুভূতি না থাকে, এটা নিশ্চিত করাটাই মূল লক্ষ্য।”
ট্রান্সজেন্ডার ও ডিএসডি অ্যাথলেটদের বিষয়টি নিয়ে বিগত এক দশক ধরে বিতর্ক চলে আসছে। পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী, পুরুষত্বপূর্ণ হরমোন টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি এমন নারী অ্যাথলেটদের ওষুধ সেবনের মাধ্যমে তা কমাতে বলা হতো। দক্ষিণ আফ্রিকান অ্যাথলেট কাস্টার সেমেন্য এই নিয়ম মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আইনি লড়াই শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসে সেমেন্য আংশিক জয় পেলেও নিয়ম বদলায়নি।
ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স জানিয়েছে, বর্তমান নিয়মে ট্রান্সজেন্ডার নারী কেউই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অংশ নিচ্ছেন না। তবে ‘স্বাভাবিক হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকা অল্পসংখ্যক ডিএসডি অ্যাথলেট’ বিশেষ শর্তে অংশ নিতে পারবেন—ট্রানজিশনাল রুলসের আওতায়।
সংস্থাটি বলছে, “এসআরওয়াই পরীক্ষাটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য, এবং ভুল ফলাফলের সম্ভাবনা খুবই কম।” পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যেই পাওয়া যাবে।
এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য একটি নির্দিষ্ট জৈবিক মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিলো, যেটি ভবিষ্যতে বহু বিতর্ক ও বিচারিক চ্যালেঞ্জের কেন্দ্রে থাকবে বলেই মনে করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।