এনএফএলে হামলা, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশি একজন নিহত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জুলাই, ২০২৫ ২৩:২৮
আপডেট: ২৯ জুলাই, ২০২৫ ২৩:৩২
শেয়ার
বন্দুকধারী শন টেমুরা। ছবি: সংগৃহীত।
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি বহুতল ভবনে সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় এক বন্দুকধারীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। হামলাকারী নিজেও পরে আত্মহত্যা করেন। ঘটনাস্থল ছিল ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ, যেখানে আমেরিকান ফুটবল লিগ (এনএফএল), ব্ল্যাকস্টোন, কেপিএমজি এবং রুডিন ম্যানেজমেন্টসহ বহু করপোরেট অফিস রয়েছে।
নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬), যিনি সেদিন ভবনটির নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। অন্য তিনজনের মধ্যে একজনকে ব্ল্যাকস্টোন কোম্পানি ওয়েসলি লি প্যাটনার নামে শনাক্ত করেছে। বাকি দুই পুরুষ নিহতের নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
নিউ ইয়র্ক পুলিশের কমিশনার জেসিকা টিশ জানিয়েছেন, হামলাকারী শন দেবন তামুরা (২৭), নেভাডা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসের বাসিন্দা। তিনি সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে আসেন এবং একটি এম-৪ রাইফেল নিয়ে এই হামলা চালান। ভবনে ঢুকেই তিনি গুলি ছুড়তে শুরু করেন এবং পরে ৩৩ তলায় গিয়ে আরও গুলি চালান। শেষ পর্যন্ত নিজেই নিজের বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তামুরা মূলত এনএফএল অফিসে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে ভুল লিফটে উঠে তিনি রুডিন ম্যানেজমেন্টের অফিসে গিয়ে হামলা চালান। ধারণা করা হচ্ছে, তামুরার ক্ষোভের মূল কারণ ছিল ক্রনিক ট্রমাটিক এনসেফালোপ্যাথি (সিটিই) নামক একটি মস্তিষ্কজনিত রোগ, যা খেলোয়াড়দের মাথায় একাধিক আঘাতের ফলে হতে পারে।
নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, তামুরার কাছে একটি নোট পাওয়া গেছে যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার মানসিক অবস্থার জন্য এনএফএল- দায়ী। যদিও তামুরা কখনো এনএফএলে খেলেননি, তবে হাইস্কুলে ফুটবল খেলতেন বলে জানিয়েছে তার সাবেক সতীর্থরা।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তামুরার গাড়ি থেকে একটি রাইফেল কেস, গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন, একটি রিভলভার এবং কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কিত আরও তথ্য থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এনএফএলের কমিশনার রজার গুডেল এক বিবৃতিতে বলেন, "এই ভয়াবহ সহিংসতায় এনএফএলের একজন কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। আমরা গভীরভাবে মর্মাহত এবং আমাদের কর্মী ও নিহতদের পরিবারের পাশে আছি।"
ঘটনার সময় ভবনের আশপাশে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এবং জরুরি বাহিনী পুরো ভবন ধাপে ধাপে খালি করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা গোলাগুলির শব্দ শুনে কাছাকাছি বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নেন।
নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ এখনও হামলার মূল উদ্দেশ্য ও তামুরার মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখছে। তাদের মতে, হামলাটি এককভাবে পরিচালিত এবং এর পেছনে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।