শিরোনাম

সনের মেজর লিগ সকার অধ্যায় শুরু। ছবি: সংগৃহীত।
টটেনহ্যাম হটস্পারের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধ্যায় যেন গত সপ্তাহান্তে শেষ হলো। ক্লাব অধিনায়ক ও কোরিয়ান সুপারস্টার হিউং-মিন সনকে বিদায় জানিয়েছে স্পার্স পরিবার। ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস) ক্লাব লস অ্যাঞ্জেলেস এফসিতে (এলএএফসি) যোগ দিচ্ছেন রেকর্ড ২০ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে।
এটি এমএলএস ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাইনিং, যা ভেঙে দিয়েছে আটলান্টা ইউনাইটেডের ফেব্রুয়ারিতে এমমানুয়েল লাটে লাথের জন্য দেওয়া ১৬.৬ মিলিয়ন পাউন্ডের আগের রেকর্ড। দুই বছরের চুক্তিতে এলএএফসিতে যোগ দিচ্ছেন সন, যিনি মঙ্গলবার বিএমও স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন দলের লিগস কাপের ২-১ জয়ের সময়। স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা) আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচিত হবেন তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় নিউক্যাসলের বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচটিই ছিল স্পার্স জার্সিতে সনের শেষ প্রতিযোগিতামূলক খেলা। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হওয়ার সময় পুরো গ্যালারি দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছে, দুই দলের খেলোয়াড়রাও ‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে সম্মান জানিয়েছে এই কিংবদন্তিকে।
সনের স্পার্স ক্যারিয়ার যেন এক অনন্য গল্প। ১৭৩ গোল, ৪৫৪ ম্যাচ, অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত। তবে সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়টি লেখা হয় তার শেষ মৌসুমেই। ইউরোপা লিগ ফাইনালে জিতে স্পার্সকে এনে দেন শিরোপা, যা ১৭ বছরের ট্রফি খরার অবসান ঘটায়। বিদায়ের মুহূর্তে সনও ছিলেন আবেগে ভাসা। সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “স্পার্স আমার ঘর ছিল। এখানে কাটানো সময়, সতীর্থ ও ভক্তদের ভালোবাসা সবই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে থাকবে।”
সনের এমএলএসে যোগ দেওয়া তার জাতীয় দলের জন্যও উপকারী হতে পারে। আগামী বছর ফিফা বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রেই, যা চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া সনকে বাড়তি সুবিধা দেবে। ইউরোপ থেকে আসা অন্যান্য তারকার তুলনায়ও তিনি কম বয়সে এসেছেন। ২০২৩ সালে লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন ৩৫ বছর বয়সে, লুইস সুয়ারেজ ও অলিভিয়ের জিরু আসেন ৩৭-এ। তুলনায় ৩৩ বছর বয়সী সন এমএলএস-এ পা রাখলেন অনেক আগেই।
নতুন ক্লাবেই তিনি পাবেন পুরোনো ক্লাবসঙ্গী হুগো লরিসকে, যিনি টটেনহ্যামে সনের সতীর্থ ছিলেন এবং গত বছর এলএএফসিতে যোগ দিয়েছেন। এই পুনর্মিলন মাঠে তাদের বোঝাপড়ায় বাড়তি সুবিধা এনে দিতে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলস এফসিতে তে তার আগমন শুধু ক্লাবটির জন্যই নয়, বরং এমএলএস-এর জন্যও বড় মাইলফলক। লিগ কর্তৃপক্ষ আশা করছে, সনের জনপ্রিয়তা উত্তর আমেরিকায় এশিয়ান ফুটবলের বাজারকে আরও বিস্তৃত করবে।
টটেনহ্যাম এখন নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে ব্যস্ত, তবে সনের বিদায়ের শূন্যতা পূরণ করা সহজ হবে না। তিনি শুধু মাঠের নায়ক নন, ছিলেন ড্রেসিং রুমের অনুপ্রেরণাও। তাই এই বিদায় স্পার্স সমর্থকদের মনে তৈরি করেছে এক গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী আপসেট।
আরও পড়ুন: