শিরোনাম
.jpg)
লাল কার্ডের ছোবলে বার্সেলোনার কাছে গুঁড়িয়ে গেল মায়োর্কা। ছবি: সংগৃহীত।
লা লিগার নতুন মৌসুমের প্রথম রাতেই সন মইক্সে উড়ে এলো অশ্রু আর হতাশার গল্প। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ক্যামেরা যখন গ্যালারির দিকে ঘুরল, তখন ধরা পড়ল মায়োর্কার জার্সি পরা এক কিশোর সমর্থক কাঁদছে। হয়তো ভেবেছিল মৌসুমের শুরুটা হবে আনন্দে ভরা, অথচ চোখের সামনে দল তারই প্রথম ৩৯ মিনিটে হজম করেছে দুই গোল আর দুই লাল কার্ড! সেখানেই যেন শেষ হয়ে গেল তাদের প্রতিরোধের গল্প।
বার্সেলোনা শুরু থেকেই জানিয়ে দিয়েছিল, গোলের ধারা তারা এবারও ধরে রাখতে প্রস্তুত। গত মৌসুমে লিগে ১০২ গোল করে শিরোপা জয়, তার আগে প্রাক-মৌসুমে চার ম্যাচে ২০ গোল, সব মিলিয়ে হ্যান্সি ফ্লিকের দলের ওপর প্রত্যাশার ভার স্বাভাবিকভাবেই ছিল বেশি। সন মইক্সে ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই লামিনে ইয়ামালের ক্রস থেকে রাফিনিয়ার গোল সেই প্রত্যাশার রঙ আরও গাঢ় করল। ষোলো মিনিট পর ফেরান তোরেস জোরালো শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করলে মনে হচ্ছিল আরও অনেক গোল আসবে।
কিন্তু গোলের জন্য অপেক্ষা দীর্ঘ হলো। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করছিল কাতালানরা। অন্যদিকে মায়োর্কা মাঠে টিকে থাকার চেষ্টা করছিল, যদিও অল্প সময়েই সব এলোমেলো হয়ে যায়। প্রথমে ইয়ামালকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মানু মোরলানেস। কিছুক্ষণের মধ্যেই একই পথ ধরেন ভেদাত মুরিকি। গোলকিপার গার্সিয়াকে বুট দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় প্রথমে হলুদ দেখালেও ভিএআরের নজরে তা রূপ নেয় সরাসরি লালে। ১০৯ বছরের ইতিহাসে লা লিগার ম্যাচে প্রথমার্ধে দুটি লাল কার্ড দেখল মায়োর্কা দ্বিতীয়বারের মতো। কাকতালীয়ভাবে, আগের ঘটনাটিও ঘটেছিল বার্সেলোনার বিপক্ষেই, প্রায় ২৩ বছর আগে।
ম্যাচের মধ্যেই জমে ওঠে বিতর্ক। তোরেসের গোলের মুহূর্তে মায়োর্কা অধিনায়ক আন্তোনিও রাইল্লো মাথায় আঘাত পেয়ে বক্সের ভেতর পড়ে কাতরাচ্ছিলেন। রেফারির মুখে বাঁশি উঠলেও খেলা থামানো হয়নি, সেখান থেকেই গোল পায় বার্সা। ঘটনাটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক থামেনি মাঠে কিংবা টেলিভিশনের পর্দায়।
অন্যদিকে, সমর্থকদের নজর কাড়ল আরেকটি মুহূর্ত। প্রায় তিন দশক পর বার্সেলোনার জার্সিতে মাঠে নামলেন একজন ইংলিশ ফুটবলার। ১৯৮৯ সালে গ্যারি লিনেকারের পর প্রথমবার প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অভিষেক হলো মার্কাস রাশফোর্ডের। ষাট মিনিটের মাথায় তোরেসের বদলি হয়ে মাঠে নামার পর তিনি বক্সের ভেতরে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে কাজে লাগাতে পারেননি। অভিষেকটা হয়তো গোলশূন্য রয়ে গেল, কিন্তু প্রত্যাশার বাতাস যে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়াবে, তা পরিষ্কার।
শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা ভাঙে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে ভেতরে ঢুকে বাঁ পায়ে চমকপ্রদ ফিনিশিংয়ে ইয়ামাল ম্যাচের সেরা গোলটি উপহার দেন। ১৭ বছর বয়সী এই প্রতিভার গোলেই ৩-০ ব্যবধানে লিগ শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে শুভসূচনা করল বার্সেলোনা। তবে ফ্লিকের মনে হয়তো একটা দুশ্চিন্তা থেকেই গেল, মায়োর্কা নয়জনের দলে পরিণত হওয়ার পরও ইয়ামালদের গোল পেতে লেগে গেছে প্রায় ছাপ্পান্ন মিনিট।
আরও পড়ুন: