শিরোনাম

নেইমার জুনিয়র ও ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ছবি: সংগৃহীত।
ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দু’বার স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন কিংবদন্তি কোচ কার্লো আনচেলত্তি। কিন্তু দুইবারই নেইমার জুনিয়রের নাম জায়গা পায়নি তালিকায়। প্রথমবার ইনজুরির কারণে, আর দ্বিতীয়বার আনচেলত্তির কৌশলগত সিদ্ধান্তে। এই বিষয়টি নিয়েই কোচ ও তারকা ফরোয়ার্ডের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়। এখন নতুন করে নেইমারকে দলে ফেরাতে স্পষ্ট শর্তই বেঁধে দিয়েছেন ব্রাজিল কোচ, ফিটনেসের সর্বোচ্চ প্রমাণ।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন নেইমার (৭৯ গোল)। কিন্তু একই বছর অক্টোবরেই গুরুতর হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে এক বছরের জন্য ছিটকে যান তিনি। এরপর আল-হিলাল থেকে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে খেলার সুযোগ মিললেও জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বারবার ইনজুরির ধাক্কা সামলাতে হওয়া নেইমারের জন্য এটি যেন এক পরিচিত গল্পই।
চলতি মাসে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ দুটি ম্যাচে প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকলেও চোটের কারণে চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি তার। আনচেলত্তি বলেছিলেন, এটি ফিটনেসজনিত সিদ্ধান্ত। তবে নেইমারের মতে, তাকে বাদ দেওয়া ছিল পুরোপুরি টেকনিক্যাল—শারীরিক অবস্থার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
সম্প্রতি ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনচেলত্তি আবারও জোর দিয়ে বলেন, নেইমারের প্রতিভা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, তবে আধুনিক ফুটবলে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন সেরা শারীরিক সক্ষমতা। “নেইমার যদি শতভাগ ফিট থাকে, তার জাতীয় দলে ফিরতে কোনো সমস্যা হবে না। সবাই চায় তাকে সুস্থ অবস্থায় ব্রাজিলের হয়ে খেলতে,” মন্তব্য করেন কোচ।
গত জুনে সেলেসাওদের প্রথম স্কোয়াড ঘোষণার সময়ও তিনি নেইমারের সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করেছিলেন। আনচেলত্তি জানান, তিনি নেইমারকে বলেছেন বিশ্বকাপের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হওয়া জরুরি। পাশাপাশি কৌশলগত দিকও তুলে ধরেন, “আমি তাকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বা স্ট্রাইকার হিসেবে খেলাতে পারি, তবে শারীরিক সক্ষমতা ছাড়া ফরোয়ার্ড পজিশনে আধুনিক ফুটবল খেলা সম্ভব নয়।”
রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই মাস্টারমাইন্ড মূলত এক বছরের জন্য ব্রাজিলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন। লক্ষ্য ২০২৬ বিশ্বকাপ, যা যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে বাছাইপর্বে ব্রাজিল ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে শুরুর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আনচেলত্তির অধীনে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে দুটি জয়, একটি ড্র এবং একটি হার পেয়েছে দল। তবুও তিনি বলছেন, “বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিলকে প্রস্তুত করা একটি বিশেষ দায়িত্ব।”
তবে আনচেলত্তির দৃষ্টি শুধু ২০২৬ নয়, আরও সামনে। তিনি চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের দায়িত্বে থাকতে চান। তার ভাষায়, “আমি এক বছরের জন্য এসেছি, তবে বিশ্বকাপের পর সবকিছু খোলা থাকবে। যদি সিবিএফ আমাকে চালিয়ে যেতে চায়, আমি রাজি। এখানে আমার পরিবারও সুখে আছে। যদি ২০৩০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব নিতে পারি, তবে সেটি হবে অসাধারণ।”
আরও পড়ুন: