শিরোনাম

অশ্রসজল চোখে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। ছবি: লিওনেল স্কালোনি।
ফুটবল দুনিয়ায় কখনো ভোর হয়, কখনো নামে সন্ধ্যা। সময়ের নিয়মেই একদিন সূর্য ডুববে, থেমে যাবে আলো। সেই সত্য এখন ছুঁয়ে যাচ্ছে লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারকেও। আগামীকাল (৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে বুয়েনস এইরেসের এস্তাদিও মনুমেন্তালে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে নামবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচটি কেবল একটি বিশ্বকাপ বাছাই নয় এটি মেসির জন্য হয়ে উঠতে পারে দেশের মাটিতে শেষ নাচ। হয়তো জাতীয় দলের জার্সিতে এটাই তাঁর শেষ উপস্থিতি আর্জেন্টিনার মাঠে।
এমন প্রেক্ষাপটে পুরো দেশ ভিজছে আবেগে। সমর্থকদের চোখে জল, কণ্ঠে গান আর হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা সবই মিশে আছে তাঁদের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে ঘিরে। আবেগ আটকে রাখতে পারেননি কোচ লিওনেল স্কালোনিও। ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে একসময় তাঁর চোখ ভিজে উঠেছিল, গলাও কেঁপে গিয়েছিল।
মেসিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন স্কালোনি। একসময় সতীর্থ, এখন তাঁর কোচ। স্মৃতিচারণ করতে গিয়েই বলছিলেন, শুধু মেসিকে বল পাস করাটাই তাঁর কাছে ছিল বিশেষ এক অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতার পরিণতি তিনি দেখেছেন ২০২২ বিশ্বকাপে ট্রফি হাতে তুলছেন মেসি। স্কালোনির ভাষায়, সেটি এক হৃদয়স্পর্শী দৃশ্য, যার প্রকৃত মূল্য সময় গড়ানোর সঙ্গে আরও স্পষ্ট হবে।
তবুও বিদায়ের ইঙ্গিত বাতাসে ভাসছে। ২০২৬ বিশ্বকাপের সময় মেসির বয়স হবে ৩৯। তখন হয়তো জাতীয় দলের জার্সি ঝুলিয়ে রাখবেন তিনি। তাই মনুমেন্তালের এই ম্যাচ ঘিরে প্রশ্ন, এটাই কি তাঁর শেষ নাচ? আর্জেন্টিনার কোচ তবুও আশা ছাড়ছেন না। তিনি বলেছেন, মেসির মতো একজনকে প্রাপ্য সম্মান জানাতে হলে তাঁকে আরও একবার দেশের মাটিতে খেলতে দিতে হবে।
সবশেষে প্রশ্নটা থেকেই যায় মেসির উত্তরসূরি কি কেউ হবে? স্কালোনির উত্তর স্পষ্ট, “না, মেসির উত্তরসূরি কেউ নেই, হবেও না।” হয়তো অনেক দুর্দান্ত খেলোয়াড় আসবে, যুগকে সংজ্ঞায়িত করবে, কিন্তু এত দীর্ঘ সময় ধরে যে যাদু দেখিয়ে গেছেন মেসি, তা আর কেউ পারবেন না।
দুই দশকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মেসির গোল ১১২, ম্যাচ ১৯৩। হাতে চারটি বড় শিরোপা দুটি কোপা আমেরিকা, একটি ফিনালিসিমা, আর ২০২২ বিশ্বকাপ। এই অর্জনই তাঁকে দিয়েছে অমরত্বের স্বাদ। আগামীকাল তিনি খেলবেন হয়তো শেষবারের মতো দেশের মাটিতে। আর যদি সত্যিই সেটিই হয় বিদায়, তবে তা হবে এক গোধূলি যা আলো ছড়াবে অনন্তকাল
আরও পড়ুন: