শিরোনাম

আফগান তারকা রশিদ খান। ছবি: সংগৃহীত।
এশিয়া কাপের জন্য আফগানিস্তান দল যখন শারজায় ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছে, তখনই নেমে এলো দুঃসংবাদ। আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খানের পরিবারে শোকের ছায়া, মারা গেছেন তাঁর দাদা হাজি আব্দুল হালিম শিনওয়ারি। খেলোয়াড়ি জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যক্তিগত ক্ষতির খবর পেয়ে ভেঙে পড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু রশিদ খানের মানসিক দৃঢ়তা তাঁকে দল ছাড়তে দেয়নি। দুঃসময়ের মাঝেও মাঠে নেমে গেছেন তিনি, খেলাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন নিজের শোকের চেয়ে।
ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলছে আফগানিস্তান। সিরিজ চলার মাঝেই দাদার মৃত্যুর সংবাদ পান রশিদ। খবরটি নিশ্চিত করেন তাঁর সতীর্থরা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে দাদার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তাঁরা। তবে রশিদ জানালেন, দাদার স্বপ্নই তাঁকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে। তাই দলের হয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাঁর সামনে অন্য কোনো পথ খোলা ছিল না।
প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, শোকের সময়ে রশিদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। হোটেলে গিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন বাবর আজম, শাহিন শাহ আফ্রিদিরা। মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এই দৃশ্য ক্রিকেটের চিরায়ত মানবিকতার গল্প মনে করিয়ে দেয়। প্রতিপক্ষের সহানুভূতি রশিদের জন্য নিঃসন্দেহে বড় সান্ত্বনা।
এমন শোকাবহ পরিস্থিতির মাঝেই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নামেন রশিদ খান। আফগানিস্তান সেদিন ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেলেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন তাঁদের অধিনায়ক। মাত্র ১৬ বলে ৩৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। দলের হারের আড়ালে তাঁর ইনিংসটি যেন এক অন্য রকম বার্তা বহন করে, শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ম্যাচ শেষে আবারও পাক ক্রিকেটাররা তাঁকে হোটেলে গিয়ে সান্ত্বনা দেন।
সব মিলিয়ে এশিয়া কাপ শুরুর আগে আফগানিস্তান ক্রিকেটের জন্য এটি এক বিশেষ মুহূর্ত। রশিদের নেতৃত্বে দলটি শারজায় প্রস্তুতি নিচ্ছে কঠিন গ্রুপ লড়াইয়ের জন্য। কারণ মূল আসরে তাঁদের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও হংকং, গ্রুপটি নিঃসন্দেহে কঠিন। তাই আগেভাগেই নিজেদের পরীক্ষা দিতে নেমেছে আফগানরা।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্দা উঠবে এবারের এশিয়া কাপের। তার আগে দাদার মৃত্যুর শোককে বুকে নিয়েই মাঠে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন রশিদ খান। ব্যক্তিগত জীবনের ঝড়ঝাপটার মাঝেও দলের স্বার্থকে বড় করে দেখা নিঃসন্দেহে তাঁকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে। ক্রিকেটপ্রেমীরা তাই শুধু একজন লেগস্পিনারের দক্ষতা নয়, একজন নেতার মানসিক দৃঢ়তার সাক্ষীও হচ্ছেন।
কঠিন সময়ে রশিদের পাশে দাঁড়িয়েছে সতীর্থ থেকে প্রতিপক্ষ, সবাই। তবে সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা হয়তো এই যে, তাঁর দাদার প্রেরণাই তাঁকে খেলায় টিকে থাকতে শিখিয়েছে। আর সেই প্রেরণাকেই আঁকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন রশিদ খান। এশিয়া কাপে তাঁর এই মানসিক দৃঢ়তা আফগানিস্তান দলের বড় শক্তি হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: