ক্রিকেটে জুয়ার অবাধ বিস্তার রোধে সরব হলেন খাজা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট, ২০২৫ ১৩:০৮

আপডেট: ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৩:৩৫

শেয়ার

ক্রিকেটে জুয়ার অবাধ বিস্তার রোধে সরব হলেন খাজা
অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ওপেনার উসমান খাজা। ছবি: সংগৃহীত।

অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা মাঠে ব্যাট হাতে যেমন আলোচনায় থাকেন, তেমনি মাঠের বাইরেও সামাজিক ও মানবিক ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার জন্য সমানভাবে খবরের শিরোনাম হন। কখনো ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কণ্ঠ তোলেন, কখনো আবার পাকিস্তানি জার্সি ঢাকতে বলার বিপক্ষে দাঁড়ান। এবারও ব্যতিক্রম হলো না।

 

এই বাঁহাতি ব্যাটার প্রকাশ্যে অস্ট্রেলিয়ার খেলাধুলায় জুয়ার বিজ্ঞাপন ও প্রচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। শিশু-কিশোরদের জুয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। খাজার অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সরকার জুয়ার বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করতে অনেক দেরি করছে। তাঁর মতে, তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে খেলাধুলা থেকে জুয়ার সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন করাই এখন সময়ের দাবি।

 

ক্যানবেরার পার্লামেন্ট হাউসে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে খাজা সরাসরি পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “ছোট ছোট বাচ্চার সঙ্গে জুয়ার যে সম্পর্ক গড়ে উঠছে, তা ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। আমরা জুয়াকে নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাভাবিক বিষয় বানিয়ে ফেলছি।”

 

নিজের অভিজ্ঞতার কথাও শোনালেন তিনি। গ্রেড ক্রিকেট খেলতে গিয়ে দেখেছেন, ১৬ বছরের কিশোররা পর্যন্ত বাজির অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছে। ন্যাশনাল রাগবি লিগ (এনআরএল) ম্যাচ দেখার আগে টিভি পর্দায় ভেসে ওঠা বাজির হারও তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। খাজার মতে, বিষয়টি এখন ধূমপানের মতোই সামাজিক বিপদে রূপ নিয়েছে। তাই একেবারে ধূমপানের মতো করেই খেলাধুলায় জুয়ার প্রচার নিষিদ্ধ করা উচিত।

 

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “খেলার মাঠ থেকে জুয়া নিষিদ্ধ করতে হবে, খুবই সরল বিষয়। যদি খেলাধুলা আর অ্যাথলেটদের সঙ্গে জুয়ার সম্পর্ক বারবার প্রচারিত হয়, যদি দেখানো হয় যে জুয়া ছাড়া খেলা দেখা যায় না, তাহলে এটা ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে।”

 

খাজা বিষয়টি সরাসরি পৌঁছে দিয়েছেন সরকারপ্রধানের কাছেও। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও অর্থমন্ত্রী জিম চালমার্সের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। চালমার্স পরে সাংবাদিকদের বলেন, “খাজা একজন মানবতাবাদী। খাজার প্রতি আমাদের অনেক শ্রদ্ধা আছে। তিনি যে বিষয়গুলো তুলেছেন, আমরা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তাঁর অবদান আমি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি।”

 

খাজার সামাজিক অবস্থান নতুন নয়। কিছুদিন আগেই তিনি আরেক সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন, যেখানে সাবেক রাগবি তারকা ডেভিড পোকক, লেবার এমপি এড হুসিক ও কয়েকজন স্বতন্ত্র এমপির সঙ্গে একত্রে দাঁড়িয়ে গাজায় যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকজনের মৃত্যুর প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই সময় তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।