অজি দলে নতুন তারকার আগমন, উইন্ডিজকে হারিয়ে এগিয়ে গেল ক্যাঙারুরা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১ জুলাই, ২০২৫ ১১:৩৮

আপডেট: ২১ জুলাই, ২০২৫ ১১:৪৬

শেয়ার

অজি দলে নতুন তারকার আগমন, উইন্ডিজকে হারিয়ে এগিয়ে গেল ক্যাঙারুরা
অস্ট্রেলিয়ার দুই নায়ক ক্যামেরন গ্রিন ও মিচেল ওয়েন। ছবি: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

যখন দলের অবস্থাই টালমাটাল, তখনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে অভিষেক ম্যাচেই ঝড় তুললেন মিচেল ওয়েন। অভিষেকেই ছয় ছক্কায় ৫০, তাতেই বদলে যায় ম্যাচের রং। তার সঙ্গে জুটি গড়ে চওড়া ব্যাট চালান ক্যামেরন গ্রিন। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ উইকেটে হারিয়ে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।


জ্যামাইকায় বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালের ম্যাচটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে তোলে ১৮৯ রান। যদিও শেই হোপ ও রোস্টন চেইসের ফিফটির পর দুইশ ছাড়ানোর পথে ছিল ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু শেষ দিকে ৩০ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলে তারা ৬ উইকেট।


রান তাড়ায় এক পর্যায়ে বিপদে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দলকে পথে ফেরান গ্রিন ও ওয়েন। পঞ্চম উইকেটে ৪০ বলে ৮০ রানের জুটি গড়েন দুজন। পাঁচ ছক্কায় ২৬ বলে ৫১ করে আউট হন গ্রিন। এমনিতে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেকে ওয়েনের জায়গা হয় ৬ নম্বরে। সেখানেই খেলেন ২৭ বলে ৫০ রানের ইনিংস। চার মারেননি একটিও, ছক্কা ছয়টি!


অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ফিফটি ছিল এতদিন ছিল কেবল রিকি পন্টিং ও ডেভিড ওয়ার্নারের। অভিষেকে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডেও ওয়ার্নারকে ছুঁয়েছেন ওয়েন।


বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ একটি উইকেটের পর ঝড়ো ফিফটিতে অভিষেকেই ম্যাচের সেরা ওয়েন। গত বিগ ব্যাশে দুটি সেঞ্চুরিতে আলোচনায় উঠে আসার পর ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোয় তার উপস্থিতি এখন নিয়মিত। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের শুরুটাও দারুণ হলো ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের। গ্যালারিতে বাবা-মা ও বান্ধবীর প্রাণবন্ত উপস্থিতি অভিষেককে করে তোলে আরও রঙিন।


স্যাবাইনা পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম তিন ওভারে ৩২ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং বিদায় নেন ১২ বলে ১৮ করে। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৯১ রানের জুটি গড়েন শেই হোপ ও রোস্টন চেইস। এই সংস্করণে অনেক দিন ধরেই ধুঁকতে থাকা চেইস ছিলেন বেশি আগ্রাসী। ফিফটি করেন তিনি ২৫ বলে। ৩২ বলে ৬০ রান করে তার বিদায়েই ভাঙে জুটি। তবে হোপ ও শিমরন হেটমায়ার দলকে এগিয়ে নেন আরও। ১৫ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ২ উইকেটে ১৫২।


ষোড়শ ওভারের শুরুর বলটিও ছক্কায় ওড়ান হেটমায়ার। তবে ওই ওভারেই হোপকে (৩৯ বলে ৫৫) বিদায় করে প্রথম উইকেটের স্বাদ পান ওয়েন। হেটমায়ার ওভারটি শেষ করেন ছক্কা মেরে। আন্দ্রে রাসেল নেমে শুরু করেন ছক্কাতেই।


কিন্তু শেষ দিকে দারুণভাবে ফিরে আসে অস্ট্রেলিয়া। বিপজ্জনক রভম্যান পাওয়েলকে দ্রুত থামান শন অ্যাবট। এক ওভারেই তিন উইকেট নেন বেন ডোয়ার্শিস। শেষ ওভারে হেটমায়ারকে (১৯ বলে ৩৮) ফেরান ন্যাথান এলিস। অস্ট্রেলিয়ার মূল পেস আক্রমণের কেউই নেই দলে। বিকল্পরাই দারুণভাবে শেষ করেন কাজ। শেষ ৫ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা তোলে মাত্র ৩৭ রান।


অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ার শুরুটা খুব ভালো ছিল না। নানা জনের চোটে দলে সুযোগ পেয়ে জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক করতে পারেন কেবল ৭ বলে ২। অধিনায়ক মিচের মার্শ তিন ছক্কা পর থেমে যান ২৪ রানেই। তিনে নেমে ভালো শুরুর পর আউট হয়ে যান জশ ইংলিসও (৮ বলে ১৮)।


এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল যখন ১০ বলে ১১ করে বিদায় নিলেন, নবম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৪ উইকেটে ৭৮। সেখান থেকেই গ্রিন ও ওয়েনের জুটি। ক্রিজে যাওয়ার পরপরই রাসেলকে দুটি ছক্কা মারেন ওয়েন, আকিল হোসেনের ওভারে মারেন তিনটি! গ্রিনও দেখাতে শুরু করেন পেশির জোর। পাল্টে যায় ম্যাচের চিত্র।


গুডাকেশ মোতিকে টানা দুই বলে ছক্কা ও চারে ২৫ বলে ফিফটি করেন গ্রিন। পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি আরেকটি ছক্কার চেষ্টায়।


আলজারি জোসেফকে ছক্কা মেরে ওয়েন পঞ্চাশে পা রাখেন ২৬ বলে। তিনিও পরের বলে আউট হয়ে যান আরেকটি ছক্কার চেষ্টায়। এরপর কুপার কনোলি নেমেও একটি করে ছক্কা ও চার মেরে আউট হন। তবে অস্ট্রেলিয়ার জিততে কোনো সমস্যা হয়নি।


সিরিজের পরের ম্যাচ বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায়। ঘরের মাঠে এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেবেন আন্দ্রে রাসেল।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:


ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৮৯/৮ (কিং ১৮, হোপ ৫৫, চেইস ৬০, হেটমায়ার ৩৮, পাওয়েল ১, রাসেল ৮, রাদারফোর্ড ০, হোল্ডার ০, মোটি ০*, জোসেফ ৩*; ডোয়ার্শিস ৪-০-৩৬-৪, অ্যাবট ৪-০-৪০-১, কনোলি ২-০-২৪-১, এলিস ৪-০-৩১-১, জ্যাম্পা ৪-০-৩০-০, ম্যাক্সওয়েল ১-০-১১-০, ওয়েন ১-০-১১-১)।


অস্ট্রেলিয়া: ১৮.৫ ওভারে ১৯০/৭ (মার্শ ২৪, ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ২, ইংলিস ১৮, গ্রিন ৫১, ম্যাক্সওয়েল ১১, ওয়েন ৫০, কনোলি ১১, ডোয়ার্শিস ৫*, অ্যাবট ৫*; আকিল ৪-০-৩৫-১, হোল্ডার ৪-০-৩১-২, রাসেল ২-০-৩১-০, জোসেফ ৪.৫-০-২৯-২, মোটি ৪-০-২৯-২, চেইস ১-০-১১-০)।


ফল: অস্ট্রেলিয়া উইকেটে ৩ জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল ওয়েল।

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ১-০ ব্যবধানে।