ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব ছাপিয়ে এগোচ্ছে ২০২৫ এশিয়া কাপ, আয়োজক ভারত-আমিরাত যৌথভাবে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৯ জুন, ২০২৫ ১১:৫৮

শেয়ার

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব ছাপিয়ে এগোচ্ছে ২০২৫ এশিয়া কাপ, আয়োজক ভারত-আমিরাত যৌথভাবে
এশিয়া কাপ ট্রফি। ছবি: এক্স

২০২৫ সালের এশিয়া কাপ নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা কাটার আভাস মিলেছে অবশেষে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক টানাপড়েন ও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের জটিলতার কারণে টুর্নামেন্টটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও এবার আশার আলো দেখাচ্ছে নানা সূত্র। ভারতের কাশ্মীরে সাম্প্রতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ায়, ক্রিকেট কূটনীতিও এগোচ্ছে ইতিবাচক পথে।


সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক সম্প্রতি তাদের চ্যানেলগুলোয় নিয়মিতভাবে এশিয়া কাপের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। যেখানে বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত, ভারতের সূর্যকুমার যাদব ও শ্রীলঙ্কার চারিত আসালাঙ্কাকে দেখা যাচ্ছে। পাকিস্তানের কোনো খেলোয়াড়কে না দেখানো হলেও, এতেই অনেকে মনে করছেন—এসিসির পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই সম্প্রচারকারী চ্যানেল এতটা সক্রিয় হয়েছে।


ভারতীয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বস্তিদায়ক এবং জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এসিসি একটি সভার মাধ্যমে ছয় দলের এশিয়া কাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি চূড়ান্ত করতে পারে। সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছে ১০ সেপ্টেম্বর, আর এবার এশিয়া কাপ হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।


প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওমান ও হংকংয়েরও টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তাদের বাদ দিয়েই আয়োজন হতে যাচ্ছে এ আসর। মূল আয়োজক হিসেবে ভারত নাম থাকলেও, ২০২৩ সালের মতো এবারও হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। অর্থাৎ পাকিস্তান তাদের ম্যাচগুলো খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, কারণ বিসিসিআই ও পিসিবির মধ্যে পারস্পরিক সফর না করার এক সমঝোতা এখনো কার্যকর রয়েছে।


ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের গুরুত্বও কম নয়। সনি স্পোর্টস এসিসির সঙ্গে ১৭ কোটি ডলারে চার আসরের সম্প্রচারের চুক্তি করেছে, যার ভিত্তিতে প্রতিটি আসরে কমপক্ষে দুটি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়ার অনানুষ্ঠানিক চুক্তিও ছিল। দল দুটি যদি ফাইনালে ওঠে, তাহলে তিনবার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে—যা বিজ্ঞাপন ও বাণিজ্যের বড় খাত।


এই ম্যাচগুলো না হলে, সনি স্পোর্টস অর্থ না দেওয়ার অধিকার রাখে, তাতে এসিসির আর্থিক ক্ষতির শঙ্কাও তৈরি হবে। উল্লেখ্য, এবারের এশিয়া কাপ আয়োজনেই প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার ব্যয় হবে, যার বড় অংশই আসবে সম্প্রচারস্বত্ব থেকে। এর ৭৫ শতাংশ রাজস্ব এসিসির পাঁচ স্থায়ী সদস্য—বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান—সমানভাবে ভাগ করে নেবে।


সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ এশিয়া কাপে একাধিক ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখা যাবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ দলও খেলবে পূর্ণ শক্তির স্কোয়াড নিয়ে, যদি সূচি ও ভেন্যু আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে।


সব মিলিয়ে, ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর—দ্বিধা-দ্বন্দ্বের ছায়া কাটিয়ে এবার হয়তো সময়মতোই অনুষ্ঠিত হবে ২০২৫ এশিয়া কাপ।