
ছবিতে বাবর আজম ও গ্যারি কার্স্টেন।
পাকিস্তান ক্রিকেটে কোচদের অস্বস্তি আর অনিশ্চয়তার এক নজির হয়ে থাকলেন গ্যারি কার্স্টেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর একটিও ম্যাচ না করিয়ে মাত্র ছয় মাসেই সরে দাঁড়ান এই বিশ্বকাপজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। সাত মাস পর অবশেষে তিনি নিজেই মুখ খুললেন, কেন তিনি পদত্যাগ করেছিলেন এবং আবার ফিরলেও কী শর্তে ফিরবেন।
২০২৪ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান কার্স্টেন, যার সঙ্গে একই সময়ে টেস্ট দলের দায়িত্ব পান জেসন গিলেস্পি। কিন্তু অক্টোবরেই আকস্মিকভাবে দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। মূল কারণ ছিল দল নির্বাচনে কোনো মতামত বা কর্তৃত্ব না থাকা।
উইজডেন ক্রিকেটের এক পডকাস্টে কার্স্টেন স্পষ্ট বলেন, "আমি দ্রুত বুঝে গিয়েছিলাম যে আমার খুব একটা প্রভাব থাকবে না। দল গঠনের সময় যখন আমাকে প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো, তখন উপলব্ধি করি কোচ হিসেবে ইতিবাচক কিছু করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।"
কার্স্টেনের কথায় বোঝা যায়, পিসিবির ভেতরের রাজনীতির জটিলতা, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ এবং ক্রিকেট-বহির্ভূত শক্তির প্রভাব তাকে পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করে। তিনি আরও বলেন, যদি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের কোচিংয়ে ফেরেন, তাহলে তা অবশ্যই ‘ক্রিকেটের মানুষের হাতে ক্রিকেট’ চালানোর পরিবেশে হতে হবে। "আমি এখন অনেক পরিণত একজন মানুষ। আমি কেবল ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করতে চাই, বাইরে কিছু নিয়ে নয়," — বলেছেন কার্স্টেন।
কার্স্টেনের বিদায়ের পর টেস্ট কোচ গিলেস্পিও দায়িত্ব ছাড়েন, যিনি পরে অভিযোগ করেন - আড়াল থেকে কাজ করে আকিব জাভেদ তাদের জায়গা দখল করেছেন। আকিবকে তিনি প্রকাশ্যেই ‘ভাঁড়’ বলেও উল্লেখ করেন। যদিও এই বিতর্কিত অধ্যায়ের পর পাকিস্তানের বোর্ড দায়িত্ব তুলে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের সাবেক কোচ মাইক হেসনের হাতে। তবে এখনও টেস্ট দলের জন্য কোনো কোচ নেই।
কার্স্টেনের অভিজ্ঞতা পাকিস্তান ক্রিকেটের গভীর সমস্যাগুলোকে আবার সামনে এনেছে। মাঠের বাইরে যদি কোচের হাতে দায়িত্ব না থাকে, তাহলে মাঠের পারফরম্যান্সে উন্নতির আশা করাই কঠিন। পাকিস্তানের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মানের কোচদের ধরে রাখা হয়তো আরও কঠিন হবে।
আরও পড়ুন: