৪৩ বছর পর এশিয়া কাপে নেই বাংলাদেশ, হকির ব্যর্থতা খতিয়ে দেখবে এনএসসি

যে টুর্নামেন্টে গত চার আসরেই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ, সেই এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপে এবার সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। ৫-৪ গোলে ওমানের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ায় এবার আর ফাইনালে ওঠা হয়নি বাংলাদেশের। এমন ব্যর্থতায় ৪৩ বছর পর প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে জায়গা হয়নি বাংলাদেশের, যা দেশের হকির জন্য এক বিরাট ধাক্কা।

ওমানের কাছে হার অস্বাভাবিক কিছু না হলেও, গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিযোগিতার আগে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলা এবং আত্মতুষ্টি ভর করে বসা—এই দুটি প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে এই ব্যর্থতার পেছনে। এবারও বাংলাদেশ দল হয়তো ধরে নিয়েছিল, আগের মতোই ফাইনালে পৌঁছে যাবে। অথচ থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় এবং শেষ পর্যন্ত ওমানের বিপক্ষে হেরে বিদায়—এই ফলাফল হকি প্রশাসনের পরিকল্পনায় বড় ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।

এই বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে বের করতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে এনএসসির পরিচালক (খেলাধুলা) এবং সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী পরিচালক (খেলাধুলা) ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার একান্ত সচিব। তবে এনএসসির সচিব মো. আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, এটি কোনো তদন্ত কমিটি নয়, বরং ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দিতেই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বস্তুত, এশিয়ার দ্বিতীয় সারির হকির দেশগুলোর মধ্যে ওমান সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক উন্নতি করেছে। তাদের প্রস্তুতি ছিল সুচিন্তিত ও পরিকল্পিত, যা জাকার্তার ময়দানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের চারটি জয় থাকলেও, দুটিতেই জয় এসেছে মাত্র এক গোলের ব্যবধানে। ফাইনালের দরজা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২০২৫ সালের এশিয়া কাপ হকি থেকেও ছিটকে গেছে বাংলাদেশ।

এটা শুধু একটি টুর্নামেন্টে ব্যর্থতা নয়, বরং দেশের হকির গোটা কাঠামো ও প্রস্তুতির অভাবকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এই ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এখন প্রয়োজন সুপরিকল্পিত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ—যা নিয়ে ভাবছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।