সবুজ হৃদয়ে মোড়া গলফ মাঠ, শমশেরনগরের চা-বাগানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২৩:১০

শেয়ার

সবুজ হৃদয়ে মোড়া গলফ মাঠ, শমশেরনগরের চা-বাগানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আহ্বান
শমশেরনগর চা-বাগানের গলফ মাঠ।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়ক ধরে এগোলে চা-বাগানের ভেতরেই হঠাৎ এক অনন্য সবুজের বিস্তার চোখে পড়ে। চা-গাছ আর ছায়াবৃক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক ঐতিহাসিক সৌন্দর্য—শমশেরনগর চা-বাগানের গলফ মাঠ।


সড়ক থেকে কিছুটা ভেতরে আধা কাঁচা রাস্তা ধরে গেলে পাওয়া যায় এই ‘সবুজ হৃদয়’। ছোট-বড় টিলার ঢেউয়ের মতো ঘাসে মোড়ানো এই মাঠ যেন ছড়িয়ে থাকা প্রশান্তির এক প্রান্তর। যেখানে ছুটে আসে নানা বয়সী মানুষ—ছবি তুলতে, গল্প করতে কিংবা নিঃশব্দে প্রকৃতিকে ছুঁয়ে দেখতে।


মাঠটির ইতিহাসও বেশ পুরোনো। কৃষি উদ্যোক্তা ও স্থানীয় বাসিন্দা মোহন রবিদাস জানালেন, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় শমশেরনগর চা-বাগান। তখনকার ব্রিটিশ কর্মকর্তারা গলফ খেলতেই তৈরি করেছিলেন এই মাঠ। চা-বাগান বদলেছে, মালিকপক্ষও পাল্টেছে, কিন্তু মাঠটি রয়ে গেছে প্রায় অপরিবর্তিত। চা-কোম্পানি সৌন্দর্যের স্বার্থে এই সবুজ মাঠের যত্ন নিয়েই রেখেছে। মাঝেমধ্যে কোনো উৎসবে বা ভিআইপি উপস্থিতিতে আবারও মাঠে গলফ খেলা হয়—তখন রঙিন সাজে সেজে ওঠে সারা এলাকা।


বিকেলবেলায় যখন সূর্য ধীরে ধীরে অস্ত যাচ্ছে, সেই মুহূর্তে এই মাঠে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখা যেন আলাদা এক অভিজ্ঞতা। শীত, হেমন্ত কিংবা বসন্ত—প্রকৃতির প্রতিটি রূপে এখানকার আলো, কুয়াশা ও ঘাসের সবুজে জড়িয়ে থাকে নিঃশব্দ মায়া।


প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন শমশেরনগরের এই গলফ মাঠ দেখতে। এটা শুধু একটি মাঠ নয়, এটি একটি ইতিহাস, একটি নিঃশব্দ সবুজ আহ্বান—যেখানে প্রকৃতি ও ঐতিহ্যের গল্প মিশে গেছে গভীর সৌন্দর্যে।