সান্তোসের বড় হারে লজ্জিত নেইমার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট, ২০২৫ ১১:০২

আপডেট: ১৮ আগস্ট, ২০২৫ ১১:০২

শেয়ার

সান্তোসের বড় হারে লজ্জিত নেইমার
ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বাজে হারের তিক্ত স্বাদ পেলেন নেইমার। ছবি: সংগৃহীত।

ব্রাজিলিয়ান লিগে এক সন্ধ্যায় যেন ভেঙে পড়ল নেইমারের জগৎ। মাঠজুড়ে প্রতিপক্ষের আধিপত্য, নিজের দলের অসহায়ত্ব আর অবশেষে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের সাক্ষী হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন এই তারকা। আজ (১৮ আগস্ট) ভাস্কো দা গামার বিপক্ষে ৬–০ গোলের ভয়াবহ হারে সান্তোস যেন ভেঙে চুরমার। ম্যাচ শেষে হতাশায় কাঁপতে থাকা নেইমারকে সতীর্থরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তার চোখের জল থামানো যায়নি।

 

ম্যাচের শুরুটা খুব একটা ভয়ংকর ছিল না। প্রথমার্ধে মাত্র একবারই বল জালে জড়ায় সান্তোস। তবে বিরতির পর যেন ভেঙে যায় তাদের প্রতিরক্ষা। টানা পাঁচবার গোল খেয়ে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নেইমারের দল। স্কোরলাইন তখন বলছে, লড়াইয়ের কোনো চিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই।

 

এই ভরাডুবির সঙ্গে নেইমারের ক্যারিয়ারের পুরোনো তিক্ত স্মৃতিও হার মানল। ২০১১ সালে ক্লাব বিশ্বকাপে বার্সেলোনার কাছে ৪–০ গোলের হার কিংবা ২০১৭ সালে বার্সেলোনার জার্সিতে পিএসজির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ৪–০ পরাজয় কোনোটিই এতটা ভারী ছিল না। আজকের রাতই হয়ে রইল তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেদনাদায়ক মুহূর্ত।

 

২০১৪ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিল যখন জার্মানির কাছে ৭–১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল, তখন চোটের কারণে নেইমার মাঠে ছিলেন না। ফলে সেই লজ্জাজনক হারের দায়ভারও তার কাঁধে পড়েনি। কিন্তু এবার সবকিছু সরাসরি দেখলেন এবং ভোগ করলেন তিনি নিজেই।

 

এই ম্যাচের আগে অনেকেই তাকিয়ে ছিলেন দুই ব্রাজিলিয়ান তারকার দ্বন্দ্বের দিকে। সান্তোসের হয়ে নেইমার আর ভাস্কো দা গামার হয়ে নামেন ফিলিপে কুতিনিও। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত লড়াইটাও কুতিনিওর দিকেই গেল। তার পায়ের জাদুতেই প্রতিপক্ষ রীতিমতো ছিন্নভিন্ন। ৫৪ ও ৬২ মিনিটে দুটি গোল করে তিনি হয়ে ওঠেন দলের নায়ক। পুরো ৬–০ জয়ের স্বাদে তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য।

 

এই জয়ে ভাস্কো দা গামা শুধু নেইমারদের কাবুই করেনি, নিজেদেরও টেনে তুলেছে অবনমন অঞ্চলের বাইরে। ১৮ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এসেছে ১৬তম স্থানে। অন্যদিকে এক ম্যাচ বেশি খেলে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে আছে সান্তোস।

 

ম্যাচ শেষে চোখ ভেজা অবস্থায় নেইমার বলেন, "আমি লজ্জিত। আমাদের পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই হতাশাজনক। সমর্থকরা ক্ষোভ দেখাতেই পারেন, সেটার পূর্ণ অধিকার তাদের আছে। এটা এমন এক অভিজ্ঞতা, যা জীবনে আগে কখনো হয়নি। কান্নাটা এসেছিল মূলত রাগ থেকে। পুরো ব্যাপারটাই ছিল চরম বাজে, আর এটাই বাস্তবতা।"

 

এই বিপর্যয়ের পরই ক্লাব কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, পরিবর্তন দরকার। তাই আর দেরি না করে বরখাস্ত করা হয় প্রধান কোচ ক্লেবার হাভিয়েরকে। এক বিবৃতিতে সান্তোস জানায়, ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা রইল, তবে পথ চলা এখানেই শেষ।