প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেই বর্ণবাদ বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট, ২০২৫ ১৫:২৮

আপডেট: ১৬ আগস্ট, ২০২৫ ১৫:৩১

শেয়ার

প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেই বর্ণবাদ বিতর্ক
প্রিমিয়ার লিগ শুরুর রাতেই বর্ণবিদ্বেষের ছায়া। ছবি: সংগৃহীত।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই ছায়া ফেলল বর্ণবাদ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) অ্যানফিল্ডে লিভারপুল ও বোর্নমাউথের লড়াই চলাকালে এক দর্শকের কটূক্তির শিকার হন অতিথি দলের ঘানার ফরোয়ার্ড অ্যান্তোইন সেমেনিও। ম্যাচের ২৯ মিনিটে বিষয়টি রেফারিকে জানান তিনি। ফলে খেলা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে চার মিনিটের জন্য।

 

পরে যদিও নিজেকে সামলে নেন সেমেন্যো। দ্বিতীয়ার্ধে টানা ১২ মিনিটে দুটি গোল করে বোর্নমাউথকে ম্যাচে ফেরান তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত লিভারপুল দেরিতে দুটি গোল করে ৪–২ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। কিন্তু জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যানের চেয়ে আলোচনায় থেকেছে সেমেনিওর প্রতি বর্ণবিদ্বেষী আচরণ।

 

খেলা চলাকালীন ঘটনাস্থল থেকে এক ৪৭ বছর বয়সী দর্শককে বহিষ্কার করে পুলিশ। মেরসিসাইড পুলিশের নিশ্চিতকরণ অনুযায়ী, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং দোষী প্রমাণিত হলে ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

 

ম্যাচ শেষে সেমেন্যো নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও কিছু বর্ণবাদী বার্তার স্ক্রিনশট প্রকাশ করে লেখেন, কখন শেষ হবে এই অবস্থা?” বোর্নমাউথ অধিনায়ক অ্যাডাম স্মিথ এ ঘটনায় হতবাক। তিনি স্কাই স্পোর্টসকে বলেন, “আজকের দিনে এসে এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এ ধরনের আচরণ অগ্রহণযোগ্য। সেমেন্যো দারুণ মানসিক শক্তি দেখিয়েছে।”

 

লিভারপুলের সমর্থকরাও মাঠে দাঁড়িয়ে খেলোয়াড়কে সমর্থন দেন। বিরতিতে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বর্ণবাদবিরোধী বার্তাও প্রচার করে। ম্যাচ শেষে ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে পুলিশের পাশে থাকবে।

 

প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, এ ধরনের আচরণের কোনো স্থান নেই ফুটবলে কিংবা সমাজে। একই সুরে বার্তা দিয়েছে ইংলিশ এফএ এবং বর্ণবাদবিরোধী সংগঠন কিক ইট আউট। সংগঠনটির ভাষায়, “সেমেনিওর সাহস প্রশংসনীয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কালো খেলোয়াড়রা প্রায় প্রতিটি সপ্তাহেই এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন।”

 

এর আগেও টটেনহ্যামের ম্যাথিস টেল, ইংল্যান্ডের জেস কার্টার, মার্কাস র‍্যাশফোর্ড, জাডন স্যাঞ্চো ও বুকায়ো সাকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন। অথচ বারবার প্রচারণা, শাস্তি আর সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও ঘৃণার এই রোগ কাটছে না।

 

অ্যানফিল্ডের ম্যাচে ৯০ মিনিটের ফুটবল শেষে আলোচনায় থাকল না লিভারপুলের জয়ের গল্প। আলোচনায় থেকে গেল সেই পুরোনো ও কুৎসিত বাস্তবতা, ফুটবল এখনও বর্ণবাদকে মুছে ফেলতে পারেনি।