শিরোনাম

সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপ রানার্সআপ বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশ মেয়েরা সাফ অনূর্ধ্ব–১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা হাতছাড়া করেছে মূলত নিজেদের ভুলে। গত শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ভুটানের বিপক্ষে ১–১ গোলে ড্র করার পরই ভারতকে শিরোপা জয়ের পথ করে দিয়েছিল লাল–সবুজের দল। সেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি ভারত, নেপালকে উড়িয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই শিরোপা নিশ্চিত করে নেয় তারা। তবে নিজেদের শেষ ম্যাচে শিরোপাজয়ী ভারতকে হারিয়ে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা খুঁজেছে বাংলাদেশ।
রোমাঞ্চকর ম্যাচে স্কোরলাইন ছিল ৩–৩ সমতায়। শেষ বাঁশি বাজার মুহূর্তে ডি–বক্সের কোনাকুনি জায়গা থেকে শট নেন সুরমা আকন্দ প্রীতি। ভারতের গোলরক্ষক মুন্নি লাফিয়ে উঠেও তা ফেরাতে ব্যর্থ হন। পরে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি, কারণ তা লেগে যায় ভারতীয় এক ডিফেন্ডারের পায়ে এবং জড়িয়ে যায় জালে। তাতেই ৪–৩ গোলের নাটকীয় জয় নিশ্চিত করে রানার্স–আপ হয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করে বাংলাদেশের মেয়েরা।
ভারত যদিও টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন, তারপরও শেষ বাঁশি বাজতেই ভারতীয় ফুটবলারদের চোখে জল নেমে আসে। বিপরীতে বাংলাদেশি মেয়েরা মাতোয়ারা হয়ে ওঠে বিজয় উল্লাসে। কারণ ম্যাচের ৮৮ মিনিট পর্যন্ত বাংলাদেশ ছিল ৩–২ গোলে এগিয়ে। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ঠিক আগে, অর্থাৎ ৮৭ মিনিটে ভারত সমতা ফিরিয়ে আনে। কিন্তু ইনজুরি সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ গোল করলে জয় হাতছাড়া হয়ে যায় ভারতের। নাটকীয় এই পরাজয় মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল ভারতীয় ফুটবলারদের।
ম্যাচের শুরুটায়ই বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। প্রথম মিনিটেই পূর্ণিমা মারমার দারুণ এক হেডে গোল পায় দল। তবে সাত মিনিটের মাথায় ভারত সমতায় ফেরে। ৩৬ মিনিটে জটলার মধ্যে আলপি আক্তারের গোলে আবার লিড নেয় বাংলাদেশ এবং প্রথমার্ধ শেষ করে ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই ৪৭ মিনিটে সুরভী আকন্দ প্রীতির গোল লিড বাড়িয়ে দেয় ৩–১ এ। তখন মনে হচ্ছিল ম্যাচ প্রায় নিশ্চিত বাংলাদেশের। কিন্তু রোমাঞ্চ তখনও বাকি। ৬৫ মিনিটে ডিফেন্ডারদের ভুলে ভারতের হাতে আসে ফেরার সুযোগ। লং পাস ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয়ে ডান প্রান্ত থেকে কোনাকুনি শটে গোল হজম করে বাংলাদেশ। গোলরক্ষক মেঘলা তখন বক্স ছেড়ে এগিয়ে এসেছিলেন, প্রতিপক্ষ তা কাজে লাগায়।
৮৮ মিনিটে আবারও একই ছবি। গোলরক্ষক সামনে এগিয়ে আসায় দূরপাল্লার শটে দ্বিতীয়বারের মতো বল জড়ায় বাংলাদেশের জালে। মুহূর্তেই ৩–৩ সমতায় ফিরে যায় ম্যাচ।
কিন্তু নাটক তখনও বাকি ছিল। ইনজুরি টাইমে সুরভী আকন্দ প্রীতি গোল করে জয় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশকে। এই নায়িকার কাছ থেকেই আসে ম্যাচসেরার পুরস্কারও।
তবু শিরোপার হিসাব মেলেনি। চার দলের ডাবল রাউন্ড রবিন লিগে ভারত ছয় ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে চ্যাম্পিয়ন হয়। বাংলাদেশ শেষ করে ১৩ পয়েন্টে। ভুটানের বিপক্ষে ড্র না করলে বাংলাদেশেরও ভারতের সমান ১৫ পয়েন্ট থাকত। সেক্ষেত্রে গোল ব্যবধান আর মুখোমুখি লড়াইয়ে নির্ধারিত হতো চ্যাম্পিয়ন।
আরও পড়ুন: