‎রানার্সআপ হয়েও এশিয়ার মূলমঞ্চে আফঈদা-সাগরিকারা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:৪৫

আপডেট: ১০ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:৫০

শেয়ার

‎রানার্সআপ হয়েও এশিয়ার মূলমঞ্চে আফঈদা-সাগরিকারা
বাছাই পেরিয়ে এশিয়ান কাপের মূলমঞ্চে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২০। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ নারী ফুটবলের ইতিহাসে যোগ হলো আরেকটি উজ্জ্বল অধ্যায়। অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের মূল পর্বে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে সাগরিকারা। সরাসরি গ্রুপসেরা হয়ে নয়, বরং সেরা তিন রানার্সআপের একটি হয়ে, কিন্তু অর্জনের মূল্য তাতে একটুও কমছে না।

 

দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলের বড় হারটি প্রথমে হয়তো মন খারাপ করিয়ে দিয়েছিল পিটার বাটলারের দলকে। প্রথমার্ধে তৃষ্ণা রানীর গোলে ১-১ সমতায় থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে একে একে পাঁচ গোল হজম করে বাংলাদেশ। এর ফলে গ্রুপসেরার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। তখন সমীকরণ স্পষ্ট, লেবাননকে হারাতে হবে চীনকে। লেবানন ৮-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ায় নিশ্চিত হয়ে যায়, রানার্সআপ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান সেরা তিনের মধ্যে। আর তাতেই নিশ্চিত এশিয়ান কাপের টিকিট।

 

দেশের ফুটবল ইতিহাসে এর আগে ১৯৮০ সালে পুরুষ দল খেলেছিল এশিয়ান কাপে। মেয়েদের মধ্যে প্রথম সুযোগ আসে ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ আসরে। এরপর ২০১৭ ও ২০১৯ সালেও সেই বয়সভিত্তিক দল যোগ্যতা অর্জন করে। সাম্প্রতিক সময়ে জুলাইয়ে ঋতুপর্ণা-তহুরারা অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়ে নতুন ইতিহাস লিখেছিলেন। এবার সেই ধারাবাহিকতায় সাগরিকাদের কীর্তি।

 

গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে হারায় ৩-১ গোলে, দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে উড়িয়ে দেয় ৮-০ গোলে। এই দুই জয়ে ১২ ম্যাচের অপরাজিত ধারা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হয় দলটি। যদিও শেষ ম্যাচে সেই ধারা থামে।

 

ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে তৃষ্ণা রানী উজ্জ্বল চার গোল করে দলের শীর্ষ গোলদাতা, পূর্ব তিমুরের বিপক্ষে পেয়েছেন হ্যাটট্রিকও। তিন গোল করেছেন মোসাম্মত সাগরিকা।

 

আট গ্রুপের বাছাই শেষে আগামী বছরের ১ থেকে ১৮ এপ্রিল থাইল্যান্ডে হবে মূল আসর। স্বাগতিক থাইল্যান্ড ছাড়াও সরাসরি জায়গা নিশ্চিত করেছে উত্তর কোরিয়া, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন। বাকি পাঁচ দলের মধ্যে একটি নাম এখন বাংলাদেশের।

 

মূল মঞ্চে ভালো করলে সামনে খুলে যাবে আরেকটি স্বপ্নের দরজা অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ্বকাপ। থাইল্যান্ডে এশিয়ান কাপে সেমিফাইনালে পৌঁছানো চার দলই পাবে পোল্যান্ড বিশ্বকাপের টিকিট, যা হবে একই বছরের সেপ্টেম্বরে। আর সেখানেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়াই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

 

বাংলাদেশের ফুটবল এখন ঠিক এমন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যখন বয়সভিত্তিক নারী দলগুলো ধারাবাহিকভাবে সাফল্য এনে দিচ্ছে। ঋতুপর্ণাদের পথ ধরে এবার সাগরিকাদের নামও সেই তালিকায় উঠে গেল স্থায়ীভাবে।

 

এশিয়ান কাপে ভালো করলে মিলবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ্বকাপের টিকিটও। থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ১২ দলের এশিয়ান কাপে সেমিফাইনালে যাওয়া চার দল পাবে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ। একই বছরের সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ডে হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ্বকাপের ১২তম আসর। বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও উত্তর কোরিয়া।