শিরোনাম
.jpg)
শিরোপা জয়ের পর উল্লসিত বাংলাদেশের মেয়েরা। ছবি: সংগৃহীত।
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে সাগরিকা-আফিদারা। তবে সাফল্যের গণ্ডি সাফ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে চান না তারা। চোখ এবার এশিয়া জয়ের দিকে। ২ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত লাওসে বসছে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টের বাছাইপর্ব।
বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে স্বাগতিক লাওস, শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া এবং তিমুরলিস্তে। আটটি গ্রুপের শীর্ষ দল ও সেরা তিন রানার্সআপ খেলবে আগামী বছরের মূল পর্বে। এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেই চলছে আফিদা-সাগরিকাদের নিবিড় প্রস্তুতি। সিনিয়র নারী দল যেখানে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে জায়গা করে নিয়েছে, সেখানে অনুজদের লক্ষ্য তাদের পথ অনুসরণ করে বড় মঞ্চে নাম লেখানো।
এএফসি বাছাইকে ঘিরে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দলের প্রাণভোমরা মোসাম্মৎ সাগরিকা। তার ভাষায়, ‘আমরা অনেক প্রস্তুত আছি। কিন্তু এর থেকেও ভালো কিছু করতে হবে। যত সময় পাব, তত ভালোভাবে তৈরি হতে হবে। তাহলে পারব কিছু করে দেখাতে।’
তবে গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো প্রতিপক্ষ থাকায় কাজটা সহজ নয়। বাংলাদেশের মেয়েরা এই পর্যায়ে অতীতে তেমন অংশ নেননি। সাগরিকার মন্তব্য, ‘প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। কীভাবে খেলে তাও দেখিনি। কোচ যা নির্দেশনা দিবেন, আমরা সেটা মেনে খেলবো। ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু করে ফিরবো।’
চাপকে মোটেও চাপ ভাবছেন না সাগরিকা। বরং দেশের মানুষের আগ্রহ ও ভালোবাসা তাদের অনুপ্রেরণার জ্বালানি, ‘যেভাবে মানুষ সাপোর্ট করছে, খেলা দেখছে, তাতে যদি ধারাবাহিকতা থাকে—আমরা ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো।’
তবে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে দারুণ পারফরম্যান্স করলেও সিনিয়র দলে একাদশে জায়গা পাননি এখনও। সেই প্রসঙ্গ উঠলে সাগরিকা সরাসরি বল ঠেলেছেন কোচের দিকে, ‘আমি কেমন পারফরম্যান্স করছি, সেটা আমি নিজে বলবো না। এটা নির্ভর করে কোচের ওপর। তিনি যদি মনে করেন আমি সেরা একাদশে থাকার যোগ্য, তবে নিশ্চয়ই সুযোগ পাবো। আমার আত্মবিশ্বাস আছে।’
অন্যদিকে, অনূর্ধ্ব-২০ দলেও বাড়ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নিজের জায়গা হারানো, আবার ফিরে পাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে সাগরিকার। ‘তিন ম্যাচে আমার জায়গায় তৃঞ্চা খেলেছে, সে ভালো করেছে। আমরা চাই প্রতিটি পজিশনে একাধিক খেলোয়াড় থাকুক। তাহলে ভালো করার তাগিদ বাড়বে।’
ফুটবলার হয়ে উঠার পেছনে সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের ভূমিকা আলাদা করে স্মরণ করেন সাগরিকা। বর্তমান কোচ পিটার বাটলারও দিচ্ছেন সমান সাপোর্ট। তাদের দুইজনকেই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন জাতীয় দলের এই উদীয়মান ফরোয়ার্ড।
ঢাকায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলে মাঠে বাবার উপস্থিতি সবসময় চেয়েছেন সাগরিকা। তবে এবার আসতে পারেননি আবাসন সংকটে। ‘বাবা আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় আসেননি। মা-ও একটু অসুস্থ ছিলেন। তবে আমি সেরা ফুটবলার হওয়ায় বাবা অনেক খুশি।’
ব্যক্তিগতভাবে ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারকে অনুসরণ করেন সাগরিকা। নিজ ড্রিবলিং ও গতি নিয়ে আশাবাদী তিনি। স্মরণীয় গোলের প্রসঙ্গ টানতেই চোখে পড়ে ভারতের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের গোল এবং সাম্প্রতিক হ্যাটট্রিক—দুটি মুহূর্তই তাকে এগিয়ে রাখে নতুন অভিযাত্রার প্রেরণায়।
সাফের স্বর্ণালঙ্কার কাঁধে ঝুলিয়ে এবার এএফসি মঞ্চে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে চাইছেন সাগরিকা—নিজের গতি, আত্মবিশ্বাস ও জেদের শক্তিতে।
আরও পড়ুন: