শুভ জন্মদিন ফুটবল জাদুকর

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪ জুন, ২০২৫ ০০:০৫

শেয়ার

শুভ জন্মদিন ফুটবল জাদুকর
বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুমু এঁকে দিচ্ছেন লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত।

বলছি, হেরে না হয় কাঁদা যায়। জিতেও চোখ ভিজে আসে কার? লিওনেল আন্দ্রেস মেসি জানেন। শুধু জানেন না, বোঝেন। সেই বোঝার ভেতর লুকিয়ে এক মহাজীবনের সুর। ফুটবল যখন শরীর নয়, আত্মা হয়ে ওঠে—সেখানে মেসির গল্পটা আর কেবল তাঁর একার থাকে না। সেটা হয়ে ওঠে আমাদের, আপন মানুষের।


আজ জন্মদিন তাঁর। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় ১০ নম্বর জার্সিটার প্রিয় মালিকের। একবার পেছন ফিরে তাকানো যাক, গল্পটা একটু অন্যভাবে বলি।


শুরুটা রোগ থেকে। এক শৈশব, যার হাড়ে হাড়ে জমে ছিল হরমোনজনিত সংকট। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, এই ছেলেটা হয়তো দৌড়াতেই পারবে না ঠিকভাবে। কিন্তু মেসি দৌড়েছেন, থামেননি। পাড়ি দিয়েছেন গোলরক্ষকদের সামনে দিয়ে, জীবনের নানা বাধা পেরিয়ে। বার্সেলোনায় পেয়েছিলেন ছায়া, তবে নিজের দেশের আকাশে বারবার কেটেছে ঝড়।


জাতীয় দলের হয়ে বারবার ব্যর্থতা, ব্যথা আর বিদায়। অলিম্পিকে সোনা জিতলেও, কোপা আমেরিকা তিনবারের রানার্সআপ, ২০১৪ বিশ্বকাপে ফাইনালে হেরে কান্না ছিল মেসির নিয়তি। অনেকে বলেছিলেন, "সে একজন ক্লাব কিংবদন্তি, দেশের হয়ে পারবে না কিছু।" এই কথাটাই বারবার ফিরে ফিরে এসেছে। যেনো চাবুক হয়ে।


কিন্তু জীবন জানে শেষ কথা বলে না কেউ। ২০২১ সালে ব্রাজিলের মাটিতে কোপা আমেরিকা জিতে একটা প্রমাণ মেসি দিয়েছিলেন। তবে পূর্ণতা? সেটি ছিল লুসাইল স্টেডিয়ামে, ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে।


৩৬ বছরের অপেক্ষা শেষ করেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু তার চেয়েও বড় জয়টা ছিল অন্য জায়গায়। মেসি ভেঙে দিয়েছিলেন সব সংশয়, ছাপিয়ে গিয়েছিলেন সময়কে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ, আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল, অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি গোল অবদান, সবটা একাই করে গেছেন মেসি।


এটা শুধুই ট্রফির জয় ছিল না, এটা ছিল কান্নার জবাব। এক অবিশ্বাস্য প্রতীক্ষার ছাপানো চিঠি। যেখানে 'না পাওয়ার আক্ষেপ' থেকে 'অর্জনের আর্তি' হয়ে উঠেছে প্রতিটি গোল, প্রতিটি ফিনিশ।


মেসির জয়ের মানে কেবল একজন খেলোয়াড়ের সাফল্য নয়, এটি কোটি মানুষের আত্মজয়। যারা মেসিকে দেখে স্বপ্ন দেখেছে, যারা তাঁর ব্যর্থতায় কেঁদেছে, তাঁর সাফল্যে ভেসেছে। তাই এই জন্মদিনে শুধু ‘শুভ জন্মদিন’ বলাটা বড্ড কম শোনায়।


বলতে ইচ্ছে করে - ধন্যবাদ মেসি, আমাদের হৃদয়কে এত সুন্দর করে গড়ে দেওয়ার জন্য। তোমার গল্পটা আসলে আমাদেরই গল্প।