শিরোনাম

৩৭ মিলিয়ন পাউন্ডে চেলসিতে এলেন আয়াক্সের তরুণ জেনারেল জোরেল হাতো। ছবি: সংগৃহীত।
চেলসিতে গ্রীষ্মকালীন দলবদলে আরও এক প্রতিভাবান ফুটবলারের সংযোজন। আয়াক্স থেকে ৩৭ মিলিয়ন পাউন্ডে দলে টেনেছে নেদারল্যান্ডসের তরুণ ডিফেন্ডার জোরেল হাতোকে। ১৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় লন্ডনে মেডিকেল পরীক্ষার পর সাত বছরের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে ব্লুজদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
চেলসির হয়ে এটি এবারের দলবদল মৌসুমের অষ্টম সাইনিং। হাতো নিজেও দারুণ রোমাঞ্চিত। তিনি বলেন, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক ভেবেছি এবং মনে হয়েছে ক্যারিয়ারের পরবর্তী ধাপ নেওয়ার এটাই সঠিক সময়। আর তার জন্য চেলসিকেই বেছে নেওয়াই ছিল সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।
আয়াক্সের বিখ্যাত যুব একাডেমি থেকেই উঠে আসা হাতো মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ক্লাবটির হয়ে অভিষেক করেন। এমনকি ১৭ বছর বয়সে হয়ে যান ক্লাব ক্যাপ্টেন। এরইমধ্যে ক্লাবের হয়ে ১১১টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি, যা তার বয়স বিবেচনায় বিশাল একটি অর্জন। একইসঙ্গে জাতীয় দলের হয়েও ২০২৩ সালে জিব্রাল্টারের বিপক্ষে ম্যাচে অভিষেক হয় তার।
আয়াক্সের প্রতিভা বিকাশ ব্যবস্থার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জোরেল হাতো, যিনি কেবল অল্প বয়সে সিনিয়র দলে অভিষেকই ঘটাননি, বরং ২০২৩ সালে জয় করেন ডাচ ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বয়সভিত্তিক স্বীকৃতি ইয়োহান ক্রুইফ প্রতিভা পুরস্কার। ১৭ বছর বয়সে ক্লাবের অধিনায়কত্ব করার সাহস ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাঁকে এই পুরস্কারের যোগ্য করে তোলে। ক্রুইফের নামাঙ্কিত এই ট্রফি শুধুই এক কিশোর ফুটবলারের কৃতিত্ব নয়, বরং ডাচ ফুটবলের ভবিষ্যতের ওপর আস্থা ও প্রত্যাশার প্রতিচ্ছবি।
চেলসির বর্তমান স্কোয়াডে সাতজন সেন্টার-ব্যাক থাকলেও শুধুমাত্র লেভি কোলউইল এবং বেনোয়া বাদিয়াশিলে প্রকৃত লেফট-ফুটেড। কিন্তু বাদিয়াশিলে গত মৌসুমে চোটে পড়েছিলেন, আর খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। তাই হাতোকে দলে টানা, কোচ এনজো মারেস্কার পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
হাতো মূলত একজন সেন্টার-ব্যাক হলেও আয়াক্সে গত মৌসুমে বেশিরভাগ সময় লেফট-ব্যাক হিসেবেও খেলেছেন। নতুন কোচ ফ্রানচেস্কো ফারিওলি ২০২৩-২৪ মৌসুমে তাকে ৯৪% সময় লেফট-ব্যাকে ব্যবহার করেছেন। তবে আগের মৌসুমে ৮০% সময় তিনি ছিলেন সেন্টার-ব্যাকে, সাধারণত ৪-২-৩-১ ছকে।
চেলসির ডান-বাম দুই প্রান্তেই বিকল্প প্রয়োজন ছিল, বিশেষ করে বেন চিলওয়েলের ফর্ম ও ইনজুরি সমস্যা মাথায় রেখে। সেই ঘাটতি পূরণে হাতো হতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
গণমাধ্যমের পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারির পর জন্ম নেওয়া ইউরোপের শীর্ষ ছয় লিগের খেলোয়াড়দের মধ্যে ক্লাব পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি মিনিট খেলা ফুটবলার তিনি। ২০২৩-২৪ মৌসুমে তার মাঠে কাটানো সময় ৮,৩৪৭ মিনিট, যা জুড বেলিংহ্যাম ও লামিন ইয়ামালের থেকেও বেশি।
দুর্দান্ত এই প্রতিভা নিয়ে চেলসি যে বড় পরিকল্পনায় এগোচ্ছে তা পরিষ্কার, আর হাতো নিজেও চান নিজের উন্নতির পরবর্তী ধাপটি ব্লুজদের হয়ে ঘরোয়া ও ইউরোপিয়ান মঞ্চে স্থাপন করতে।
আরও পড়ুন: