দুই বছরের অপেক্ষার অবসান, নির্দোষ প্রমাণিত পাকেতা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৫১

শেয়ার

দুই বছরের অপেক্ষার অবসান, নির্দোষ প্রমাণিত পাকেতা
দুই বছর পর নির্দোষ প্রমাণিত লুকাস পাকেতা। ছবি: লুকাস পাকেতা।

দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের জটিলতা ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটেছে অবশেষে। ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশন। স্পট-ফিক্সিংয়ের গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও, শেষ পর্যন্ত চারটি মূল অভিযোগ ‘অপ্রমাণিত’ বলে রায় দিয়েছে কমিশন।

 

২০২৩ সালের আগস্টে এফএ পাকেতার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। মূল অভিযোগ ছিল, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে হলুদ কার্ড দেখেছেন—যার উদ্দেশ্য ছিল বাজির বাজার প্রভাবিত করা। ম্যাচগুলো ছিল—২০২২ সালের নভেম্বরের লেস্টারের বিপক্ষে, এবং ২০২৩ সালে অ্যাস্টন ভিলা (১২ মার্চ), লিডস ইউনাইটেড (২১ মে), ও বোর্নমাউথের (১২ আগস্ট) বিপক্ষে।

 

তবে সম্প্রতি শুনানির পর কমিশন রায় দেয়, এই চারটি অভিযোগের কোনওটিই প্রমাণিত হয়নি। অর্থাৎ, স্পট-ফিক্সিংয়ের দায় থেকে পাকেতা পুরোপুরি মুক্ত।

 

তবে সব দায় থেকে একেবারে রেহাই পাননি পাকেতা। তদন্তে সহযোগিতা না করার দায়ে এফএ রুল এফ২ ও এফ৩ ভঙ্গের দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে শাস্তি নির্ধারণ করবে কমিশন, তবে সেটি হবে স্পট-ফিক্সিংয়ের মতো গুরুতর কিছু নয়।

 

রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় পাকেতা বলেন, “এই তদন্ত শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমি আমার নির্দোষতার কথা বলে এসেছি। এখনো আমি বেশি কিছু বলতে পারছি না, তবে আমি সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ, আবার হাসিমুখে ফুটবল খেলতে মুখিয়ে আছি।”

 

তাঁর স্ত্রী মারিয়া ফুর্নিয়ের ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “আমরা এই দুঃস্বপ্নের মধ্যে ছিলাম দুই বছর ধরে।” এমনকি মে মাসে টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচে হলুদ কার্ড পাওয়ার পর পাকেতাকে কাঁদতেও দেখা যায়।

 

তাঁর আইনজীবী আলাস্টেয়ার ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, পাকেতা খুবই আবেগাপ্লুত এবং দারুণ স্বস্তি অনুভব করছেন। তিনি বলেন, “একটি বিশাল বোঝা যেন তাঁর কাঁধ থেকে নেমে গেছে।”

 

২০২২ সালে লিওঁ থেকে প্রায় ৩৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে ওয়েস্ট হ্যামে যোগ দেন পাকেতা। প্রথম মৌসুমেই ক্লাবকে ইউরোপা কনফারেন্স লিগ জেতাতে সাহায্য করেন। ২০২৩ সালের আগস্টে ৮৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তদন্ত শুরু হওয়ার পর সেই ট্রান্সফার থেমে যায়। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্যাম্পবেল।

 

ওয়েস্ট হ্যাম ভাইস-চেয়ার কারেন ব্র্যাডি বলেছেন, “এই রায় আমাদের জন্য স্বস্তির, এবং ক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা পাকেতার পাশে ছিলাম পুরোটা সময়। এখন এই অধ্যায়ের ইতি টেনে পাকেতা নতুন করে শুরু করতে পারবেন।”

 

এফএ জানিয়েছে, তারা কমিশনের পূর্ণাঙ্গ লিখিত রায় পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে এবং ততক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবে না।

 

অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা চারটি ম্যাচে পাকেতার হলুদ কার্ড পাওয়ার মুহূর্তগুলোকেও তদন্তে খুঁটিয়ে দেখা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফুটবলের মাঠে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনাই প্রমাণিত হয়েছে স্বাভাবিক খেলার অংশ হিসেবে। ফলে পাকেতা এখন মাথা উঁচু করেই ফিরতে পারবেন সবুজ গালিচায়।