শিরোনাম

বাংলাদেশর সাবেক কোচ স্টুয়ার্ট ল। ছবি: সংগৃহীত।
একটা সময় মানসম্পন্ন পেসারের অভাবে হাপিত্যেশ করতে হতো বাংলাদেশকে। একাদশ সাজাতে গেলে টিম ম্যানেজমেন্টকে পেসারদের জায়গা দেওয়াটাই হয়ে পড়ত দুষ্কর। তখন ভরসা ছিল স্পিন বোলিংয়ের ওপর, আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ রফিক, সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম কিংবা পরবর্তী সময়ে মেহেদী হাসান মিরাজরা ছিলেন দলের প্রধান অস্ত্র। কিন্তু সময় পাল্টেছে। সাম্প্রতিক সময়ে পেস বোলিংয়ে অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশে। এই পরিবর্তনকে ‘পেস বিপ্লব’ হিসেবেই দেখছেন ক্রিকেটবিশ্ব।
বাংলাদেশের এমন অগ্রগতিতে মুগ্ধ হয়েছেন দলের সাবেক প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল। ২০১১ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান। যদিও পারিবারিক কারণে মাত্র ৯ মাস পরই চাকরি ছাড়তে হয় তাঁকে। সেই অল্প সময়ে বাংলাদেশকে ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি। তখন দলের পেস বোলিং নেতৃত্বে ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সঙ্গে ছিলেন শাহাদাত হোসেন, শফিউল ইসলাম ও নাজমুল হোসেনরা।
সেই সময়ের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশকে তুলনা করে স্টুয়ার্ট ল বলেন, “২০১২ সালের সাথে যদি এখনকার তুলনা করি তাহলে পেস বোলিংয়ের পরিবর্তন আমাকে মুগ্ধ করেছে। একজনের নাম বলবো না, কারণ তারা বেশ কয়েকজন মানসম্পন্ন পেসার পেয়েছে। তারা কঠোর পরিশ্রম করে। বাংলাদেশে এত গতিতে বোলিং করা সহজ নয়, এটা পুরোটা কঠিন পরিশ্রমের ফল।”
মাশরাফি যখন ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে, তখন উঠে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। এরপর শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদরা একে একে গড়ে তুলেছেন দেশের ক্রিকেটে ‘পেসারদের কারখানা’। ঘরোয়া ক্রিকেটে এবং বয়সভিত্তিক স্তরেও নিয়মিত উঠে আসছে প্রতিশ্রুতিশীল পেসাররা।
বাংলাদেশ ও নেপালের ক্রিকেটকে তুলনা করতে গিয়ে ল বলেন, “আমরা এখনো একটি দল গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ তো অনেকটা এগিয়ে গেছে। তাদের দলে দুর্দান্ত সব পেসার আছে। তাদের বেশ কয়েকজন নিয়মিত ১৪০ কিলোমিটার বা তারও বেশি গতিতে বল করছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে গেলে এটা অপরিহার্য। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে কিছুটা মিল আছে, তবে পেসার তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে।”
জাতীয় দলের দায়িত্ব ছাড়াও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টেকনিক্যাল উপদেষ্টা ছিলেন স্টুয়ার্ট ল। তাঁর অধীনেই মেহেদী হাসান মিরাজদের নেতৃত্বে ২০১৬ সালের যুব বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। সেই দলে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সাইফ হাসান, জাকির হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা। এখনো তাঁদের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তিনি।
সাবেক এই কোচ জানিয়েছেন, “অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গেই আমার কথা হয়। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সময়কার ক্রিকেটাররা এখনো পরামর্শ নিতে হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে ভিডিও পাঠায়। আমি সবসময় বলি, যদিও তোমাদের কোচ নই, তবুও যখনই প্রয়োজন হবে আমাকে নক করবে।”
বাংলাদেশ ক্রিকেটে পেসারদের এমন উত্থানকে তিনি কঠোর পরিশ্রমের ফল বলে মনে করেন। তাঁর মতে, এটি কেবল শুরু, সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক বড় সাফল্য এনে দিতে পারে এই পেসাররা।
আরও পড়ুন: