ফারুক আহমেদের পদত্যাগ ঘিরে নতুন বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ১৩:০০

আপডেট: ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ১৩:৪৩

শেয়ার

ফারুক আহমেদের পদত্যাগ ঘিরে নতুন বিতর্ক
বিসিবি সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে মুখ খুললেন ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদ থেকে বিদায়ের পেছনে নানা ব্যাখ্যা ঘুরপাক খাচ্ছে। ফারুক আহমেদ, সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক, বলছেন তিনি সরকারের পরামর্শে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন, অথচ পরে সেই সরকারের কাছে ‘অপছন্দের’ মানুষ হয়ে পড়েন। ফলে মাত্র ৯ মাসের মধ্যেই তাঁকে বিদায় নিতে হয় দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের শীর্ষ আসন থেকে। 

 

ফারুকের ভাষায়, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার অফিস থেকেই তাঁকে বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল। দেশের এক শীর্ষস্থানীয় এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ওনার অফিস থেকেই আমাকে ‘গো এহেড’ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, নির্বাচনে অংশ নিলে কোনো সমস্যা নেই, আমি যেন প্রস্তুতি নিই। পরে হয়তো তাঁরা ভেবেছেন আমি তাঁদের স্বার্থ দেখব না, তাই সরিয়ে দিয়েছে।”

 

এমনকি ফারুক দাবি করেছেন, তিনি কখনোই বোর্ড সভাপতির ক্ষমতা ব্যবহার করে কাউন্সিলরশিপ কেনার চেষ্টা করেননি, কিংবা কোনো ক্লাবের মালিকানা গ্রহণ করেননি। তাঁর ভাষায়, “আমি বিসিবির কাউন্সিলরও নই। কাউন্সিলর না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। তাই কাউকে যদি এ নিয়ে সলাপরামর্শ করে থাকি, সেটাকে অপরাধ বলা যাবে না।”

 

অভিযোগ ওঠে, সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ফারুক ব্যবসায়িক স্বার্থকে গুরুত্ব দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তিনি সাফ জানালেন, ব্যবসায়ী পরিচয় তাঁর আগে থেকেই ছিল, আর বিসিবি সভাপতি বা পরিচালকরা তো বেতনভোগী নন। তাই ব্যবসা করাই তাঁর পেশা, তবে বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ব্যবসায়িক লেনদেনে তিনি যুক্ত হননি।

 

অন্যদিকে, বিপিএলকে ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কের দায় এককভাবে তাঁর কাঁধে চাপানোর চেষ্টা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ফারুক। তিনি বলেন, “বিপিএলের সময় যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের দায়িত্ব পালনের অবস্থাটিও দেখা উচিত।”

 

এই পাল্টা বক্তব্য আসছে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে। সম্প্রতি ইউটিউবভিত্তিক টকশোতে তিনি বলেন, ফারুক ক্রিকেটের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছিলেন নির্বাচন ও ক্লাব নিয়ন্ত্রণে, পাশাপাশি ব্যবসায়ও আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন। তাঁর ভাষায়, “ক্রিকেটের চেয়ে ওনার আগ্রহটা বেশি ছিল কীভাবে আবার সভাপতি হওয়া যায় ক্লাব নেওয়া যায়, এসব দিকে।”

 

উপদেষ্টা এটাও জানিয়েছেন, বিপিএলে দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিয়ে যেসব জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার দায়ও মূলত ফারুকের উপর বর্তায়। তবে তিনি একইসঙ্গে স্পষ্ট করে বলেছেন, ফারুকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই।

 

দুদকও পরবর্তীতে বিসিবির কার্যক্রম নিয়ে তদন্ত চালায়। ফারুকের বিরুদ্ধে বিসিবির তহবিল এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে স্থানান্তরের যে অভিযোগ উঠেছিল, তদন্তে তার কোনো প্রমাণ মেলেনি। বরং দুদকের প্রতিবেদনে প্রশংসিত হয়েছে তাঁর একটি উদ্যোগ তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটের অনিয়ম বন্ধ করে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

 

তবে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, ভোটার সংখ্যা বাড়াতে বিসিবির ভেতরে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ দেওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এ নিয়ে আলাদা অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে দুদক।