পুরানের অবসরে অবাক নন স্যামি, শঙ্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ জুন, ২০২৫ ০৮:৫৫

আপডেট: ১৩ জুন, ২০২৫ ১১:০০

শেয়ার

পুরানের অবসরে অবাক নন স্যামি, শঙ্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ
ড্যারেন সামির সাথে কথপোকথনে ব্যস্ত নিকোলাস পুরান। ছবি: সংগৃহীত

মাত্র ২৯ বছর বয়সে নিকোলাস পুরান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোয় অনেকেই বিস্মিত হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামি ছিলেন না তাঁদের দলে। এক সময়ের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আগেই আঁচ পেয়েছিলেন এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। স্যামির আশঙ্কা, পুরানের পথ অনুসরণ করে আরও অনেক তারকাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।


সোমবার হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পুরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কখনো টেস্ট না খেললেও ওয়ানডে খেলেছেন ২০২২ সালে শেষবার। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ছিলেন দলের অন্যতম স্তম্ভ। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে, এবং এক সময়ের অধিনায়ক হিসেবে দলের পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তিনি। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আট মাস আগে তার বিদায় নতুন করে নাড়া দিয়েছে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটকে।


স্যামি জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে যখন তিনি পুরানের সঙ্গে আলোচনা করেন, তখনই বুঝে গিয়েছিলেন কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। পুরান তার এজেন্টের মাধ্যমে সংকেত দিয়েছিলেন, যে তিনি দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না-ও থাকতে পারেন। তাই কোচ হিসেবে স্যামি তখন থেকেই তার অনুপস্থিতি মেনে নিয়েই ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সাজানো শুরু করেন।


“আমি তাকে পেতে চাইব, কারণ এমন প্রতিভা সবসময় দরকার হয়,” বলছিলেন স্যামি। “কিন্তু আমি কারও ক্যারিয়ার নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং আমাদের জানিয়েছে অনেক আগে। আমি বিষয়টিকে সম্মান করি।”


পুরান বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটার। আইপিএল থেকে শুরু করে সিপিএল, পিএসএল, এমএলসি—বিভিন্ন লিগে খেলে বেড়ানো এই ব্যাটসম্যানের মূল আয়ও এখন এসব লিগ থেকেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও ছিলেন না তিনি। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার পেছনে আর্থিক বাস্তবতা এবং মুক্ত খেলোয়াড় জীবনের আকর্ষণকেই বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও হাইনরিখ ক্লসেনের মতো আরও দুই আন্তর্জাতিক তারকা সম্প্রতি অবসরের পথ বেছে নেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কি এখন শুধুই ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্ভর?


স্যামির কথাতেই উঠে আসে আশঙ্কার প্রতিধ্বনি—“আমরা খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলার প্রেরণা দিতে চাই, তবে বিষয়টা এখন পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমি নিশ্চিত আরও অনেকে এই পথ বেছে নেবে।”


পুরান বিদায় জানিয়ে ফেলেছেন, কিন্তু তার বিদায়ের ছায়া যে গোটা ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের উপরই ঘনিয়ে আসছে, তা বলাই বাহুল্য।