শিরোনাম

নিজ ভাস্কর্যের পাশে ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান বেলিন্ডা ক্লার্ক। ছবি: সংগৃহীত।
ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান কে? প্রশ্নটা শুনলেই অনেকের মনে ভেসে ওঠে শচীন টেন্ডুলকারের নাম। কিন্তু আসল উত্তরটা অন্যরকম। ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে ওয়ানডেতে প্রথম দ্বিশতক উপহার দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বেলিন্ডা ক্লার্ক। সেটিই শুধু নয়, মাঠে অসাধারণ কৃতিত্ব আর মাঠের বাইরে প্রশাসনিক নেতৃত্ব দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন অনন্য। এবার পেলেন তার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি, স্পোর্ট অস্ট্রেলিয়া হল অব ফেমে ‘লেজেন্ড’ মর্যাদা।
এই হল অব ফেমে জায়গা পান অস্ট্রেলিয়ার সেরা সব ক্রীড়াবিদ। তবে যাঁরা নিজেদের অর্জন দিয়ে আরও আলাদা করে তোলেন, তারাই পান কিংবদন্তির এই মর্যাদা। এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৩ জন ক্রীড়াবিদ পেয়েছেন এই খেতাব, আর ক্রিকেটারদের মধ্যে ক্লার্ক মাত্র ষষ্ঠ। শুরুটা হয়েছিল ক্রিকেটের চিরসেরা স্যার ডন ব্র্যাডম্যান দিয়ে। এরপর এসেছেন কিথ মিলার, রিচি বেনো, ডেনিস লিলি আর শেন ওয়ার্ন। তাদের কাতারেই এবার জায়গা হলো ক্লার্কের।
মেয়েদের ক্রিকেটে বেলিন্ডা ক্লার্ক নামটা মানেই এক ইতিহাস। ১৯৯১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন তিনি। ১১৮ ওয়ানডেতে করেছেন ৪ হাজার ৮৪৪ রান, গড় ৪৭.৪৯। ১৮ টেস্টে রান করেছেন ৯১৯, গড় প্রায় ৪৬। মাত্র ২৩ বছর বয়সে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন জাতীয় দলের, আর অধিনায়ক হিসেবেই খেলেছেন ১০১ ওয়ানডে, যার ৮৩টিতেই জয় অস্ট্রেলিয়ার! তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া দুইবার জিতেছে বিশ্বকাপ। আর ১৯৯৭ বিশ্বকাপে ডেনমার্কের বিপক্ষে তার ১৫৫ বলে ২২৯ রানের ইনিংস আজও কিংবদন্তি হয়ে আছে।
কিন্তু কেবল মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও নারী ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার উইমেনস উইংয়ের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। নারী ক্রিকেটের প্রসারে নীতিনির্ধারণ থেকে শুরু করে আইসিসি উইমেন্স কমিটিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
এর আগেও স্বীকৃতি পেয়েছেন বহু। ২০১১ সালে ঢুকেছিলেন স্পোর্ট অস্ট্রেলিয়া হল অব ফেমে, একই বছর নাম উঠেছিল আইসিসি হল অব ফেমেও। ২০২৩ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে উন্মোচন করা হয় তার ভাস্কর্য, বিশ্ব ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে পাওয়া সেই সম্মান।
লেজেন্ড খেতাব পাওয়ার পর উচ্ছ্বসিত ক্লার্ক বলেছেন, “এটি অবিশ্বাস্য এক সম্মান। বিস্ময়, কৃতজ্ঞতা আর গর্ব একসঙ্গে অনুভব করছি। আমি খেলেছি দলীয় খেলা, আর পুরো দলের সহায়তা ছাড়া কোনো অর্জন সম্ভব হতো না। আমার সতীর্থ, কোচ, সাপোর্ট স্টাফ, সবাই এই স্বীকৃতির অংশ।”
ভবিষ্যৎ নিয়েও তিনি আশাবাদী, “খেলাটা এখন যে পর্যায়ে যাচ্ছে, তা গর্ব করার মতো। ন্যায্যতার স্বপ্ন আমরা সবসময় দেখেছি, সেই স্বপ্ন পূরণের পথ এখন আরও গতিময়। যদিও পথ এখনও বাকি, তবু আমি আশাবাদী।”
আরও পড়ুন: