হারের বেদনায় বিষণ্ণ বাংলাদেশ, এখন লক্ষ্য হংকং ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ জুন, ২০২৫ ০৫:১৫

শেয়ার

হারের বেদনায় বিষণ্ণ বাংলাদেশ, এখন লক্ষ্য হংকং ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হারের পর বিমর্ষ ফাহামিদুল ইসলাম (বাঁয়ে) ও হামজা চৌধুরী।

শেষ বাঁশি বাজার পরপরই উল্লাসে ফেটে পড়ে সিঙ্গাপুর দল, দ্রুত মাঠ ছেড়ে তারা চলে যায় ড্রেসিংরুমে। কিন্তু বিপরীত প্রান্তে সিলেট স্টেডিয়ামের সবকিছু থমকে যায় বিষাদের ছায়ায়। হামজা চৌধুরী, শোমিত সোম, রাকিব হোসেন—বাংলাদেশ দলের অনেকেই তখন মাঠেই পড়ে থাকেন কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে কিংবা শুয়ে, মুখ ঢেকে কান্না লুকানোর বৃথা চেষ্টা করতে করতে। সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছুঁয়ে যায় পুরো গ্যালারি। সমর্থকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারা যখন হোটেলে ফেরে, রাত কাটে এক নিঃসঙ্গ নীরবতায়, যেখানে ছিল না কোনো হাসি কিংবা হালকা কথাবার্তা। সহকারী কোচ হাসান আল মামুন জানান, হারের পর পুরো দলের পরিবেশ বদলে যায়, হাসিখুশি ছেলেরা হয়ে ওঠে চুপচাপ, গুমরে থাকা কিছু মুখ।

এই ম্যাচ ঘিরে প্রত্যাশা ছিল প্রবল, বিশেষ করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তারকা হামজা চৌধুরীকে ঘিরে। শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক, এরপর ভুটানের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, সব মিলে তার নেতৃত্বে দল নিয়ে স্বপ্ন বুনেছিল অনেকেই। কিন্তু সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে সেই স্বপ্নে ধাক্কা লাগে। রাকিব হোসেন একটি গোল করলেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। এই হারে ভেঙে পড়া দলকে মানসিকভাবে আবার প্রস্তুত করতে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বিশেষ টিম মিটিং করেন। খেলোয়াড়দের মনে করিয়ে দেন—সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি, সামনে আরও সুযোগ আছে হংকংয়ের বিপক্ষে।

প্রথমবার বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামা শোমিত সোম ও ফাহামিদুল ইসলামও হতাশায় ভুগছেন। কানাডা ও ইতালির লিগ থেকে এসে তারা যেমন আশাবাদী ছিলেন, মাঠের বাস্তবতা হয় ঠিক উল্টো। সহকারী কোচ বলেন, দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও দল হাল ছাড়েনি। রাকিবের গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ধার বাড়ে, শেষ মুহূর্তে এক সম্ভাব্য পেনাল্টি না পাওয়ায় হতাশা আরও বাড়ে। কিন্তু ফুটবলে ভাগ্য অনেক সময় মুখ ফিরিয়েও নেয়, যেমনটা ঘটেছে এই ম্যাচে।

এখন বাংলাদেশের সামনে বাকি রয়েছে হংকংয়ের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ। সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের পয়েন্ট সমান হলেও বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে নয়, বরং ভারতের তুলনায় তারা এগিয়ে। তাই গ্রুপ ‘সি’-এর শীর্ষে থেকে মূল পর্বে জায়গা করে নিতে হলে এই দুটি ম্যাচে ভালো করতেই হবে। কোচিং স্টাফ আপাতত ছুটিতে গেলেও খেলোয়াড়দের বলে দেওয়া হয়েছে—এই হার কোনো কিছু শেষ করে দেয়নি, বরং এখনই সময় নিজেকে গুছিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর। হোটেল ছাড়ার সময় হাসান আল মামুন যেন দলকে নতুন করে শপথ করিয়ে দেন—“তোমরা ফিরে এসো সতেজ হয়ে, নতুন লড়াইয়ের জন্য তৈরি হয়ে।” সেই প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় এখন গোটা বাংলাদেশ ফুটবল।