শানাকায় শাণিত শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৬৮

লাইভ আপডেটস

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২০:১৪

আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:২৩

শেয়ার

শানাকায় শাণিত শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৬৮
ছক্কা হাঁকাচ্ছেন দাসুন শানাকা। ছবি: সংগৃহীত।

শেষ পর্যন্ত লড়াই করার মতো সংগ্রহ গড়ল শ্রীলঙ্কা। মূল ভরসা ছিলেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। শেষ বলে তাসকিন আহমেদকে ছক্কা মেরে ইনিংস শেষ করেন তিনি। ৩৭ বলে ৬৪ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন শানাকা, যেখানে ছিল ৩ চার ও ৬ ছক্কা। তাঁর ব্যাটেই ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান তুলেছে লঙ্কানরা।

 

পাওয়ার প্লের ঝড়ো শুরুর পর মধ্য ওভারে ম্যাচে ফিরেছিল বাংলাদেশ। ১৪তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান ফিরিয়ে দেন কুশল পেরেরাকে। মাত্র ১৬ রান করে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। এর আগে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেছিলেন পেরেরা। বাংলাদেশি বোলাররা মাঝের ওভারে দারুণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন। ৭ম থেকে ১২তম ওভারে শ্রীলঙ্কা তোলে মাত্র ৩০ রান, হারায় ২ উইকেট। শেখ মেহেদীর স্পিনে ভর করে চাপে পড়ে লঙ্কানরা।

 

কিন্তু ১৫তম ওভরে বদলে যায় দৃশ্যপট। নাসুম আহমেদের এক ওভার থেকে একাই ১৬ রান তুলে নেন শানাকা। ডিপ মিডউইকেটে ১০১ মিটারের বিশাল ছক্কা মারেন, এরপর ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে আরেকটি। সেখান থেকেই শুরু তাঁর মারমুখী ব্যাটিং।

 

১৭তম ওভারে মুস্তাফিজ দুর্দান্ত বোলিং করলেও শামীম হোসেন ধরতে পারেননি শানাকার একটি ক্যাচ। জীবন পেয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন লঙ্কান অধিনায়ক। ১৮তম ওভারে শরীফুল ইসলামের বলে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন তাওহিদ হৃদয়। আরেকটি জীবন পেয়ে টানা দুই ছক্কায় তুলে নেন ফিফটি।

 

শেষ দিকে চারিত আসালাঙ্কা (১২ বলে ২১) সঙ্গ দিলেও রানআউট হয়ে ফেরেন। তবে অপর প্রান্তে অটল থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান শানাকা। তাঁর ব্যাটে শেষ দুই ওভারে এসেছে ৩০ রানের বেশি।

 

শেষ বলে ছক্কা মেরে ইনিংসের ইতি টানার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করেন লড়াই করার মতো সংগ্রহ। শানাকার ঝড়ো ব্যাটে দাঁড়িয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস, ১৬৮/৭। এই ইনিংসটাই হয়তো নির্ধারণ করে দেবে ম্যাচের ভাগ্য।

 

শেখ মাহেদীর জোড়া আঘাত, শ্রীলঙ্কা ৭২/৩

পাওয়ারপ্লের ঝড়ো সূচনার পর ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে কুশল মেন্ডিস-পাতুম নিশাঙ্কার ব্যাটে ঝড় তুললেও মধ্য ওভারে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাইগার বোলাররা। বিশেষ করে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান তুলে নিয়েছেন দুটো গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।

 

৭ম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে মাত্র ৩ রান দেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে আসল ধাক্কাটা দেন মেহেদী। ৮ম ওভারে তাঁর অফ স্পিনে বড় আঘাত হানে বাংলাদেশ। আগের বলেই ছক্কা হাঁকানো কুশল মেন্ডিস এবার চেষ্টা করলেন একই শট খেলতে। কিন্তু ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে সাইফ হাসানের হাতে ধরা পড়ে ফিরতে হলো তাঁকে। ২৫ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললেও থামতে হলো ভুল শটে। ৫৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় লঙ্কানরা।

 

এরপর চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং। নবম ওভারে তাসকিন আহমেদ মাত্র ৫ রান দেন, বাড়তে থাকে চাপ। আর সেই চাপ কাজে লাগান মেহেদী। ১০ম ওভারের প্রথম বলেই বোল্ড করে ফেরান ধুঁকতে থাকা কামিল মিশারাকে। ব্যর্থ ব্যাটসম্যান ১১ বলে করেন মাত্র ৫ রান। ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় শ্রীলঙ্কা।

 

মেহেদীর জোড়া আঘাতে এখন বেশ চাপে লঙ্কানরা। স্কোরবোর্ডে ৭২/৩, হাতে অভিজ্ঞ কুশল পেরেরা থাকলেও মাঝের সারির ব্যাটারদের এখন দায়িত্ব নিতে হবে দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলার।

 

পাওয়ারপ্লে শেষে শ্রীলঙ্কা ৫৩/১

 

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের লড়াই শুরু হয়েছে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি পাতুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন। প্রথম ওভারেই শরীফুল ইসলামকে ছক্কা মেরে রঙিন সূচনা করেন মেন্ডিস। পরের ওভারে নাসুম আহমেদকেও কাট করে বাউন্ডারিতে পাঠান এই ডানহাতি ব্যাটার।

 

তবে আসল আগ্রাসন দেখিয়েছেন নিশাঙ্কা। শরীফুলের তৃতীয় ওভারে টানা তিনটি চমৎকার চার মেরে ম্যাচে গতি আনেন তিনি। মিড উইকেট, মিড অফ, সব দিকেই বল ছুটিয়ে দিয়েছেন সীমারেখার বাইরে। ১৫ রান উঠেছে ওই ওভারেই।

 

নাসুমের দ্বিতীয় স্পেলেও হাত খুলে খেলেছেন লঙ্কানরা। কুশল মেরেছেন চোখধাঁধানো এক ছক্কা, যোগ হয়েছে ৮ রান। ৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৬/০।

 

এমন সময়ে বল হাতে আসেন তাসকিন আহমেদ। ওভারের প্রথম বলেই নিশাঙ্কার ফ্লিক গড়িয়ে যায় গ্যালারিতে ছক্কার জন্য। কিন্তু অভিজ্ঞ পেসার শান্ত থেকেছেন। পরের চার বলে মাত্র ২ রান দেন। আর শেষ বলেই ফেরান বিপজ্জনক হয়ে ওঠা নিশাঙ্কাকে। ডিপ স্কয়ার লেগে সাইফ হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন লঙ্কান ওপেনার। ১৫ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন নিশাঙ্কা।

 

পাওয়ারপ্লের ছয় ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৫৩/১। মেন্ডিস রয়েছেন অপরাজিত, আক্রমণাত্মক মেজাজেই। বাংলাদেশের বোলারদের এখন চাই দ্রুত দ্বিতীয় আঘাত, নইলে এই রানচক্র নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

 

দুবাইয়ে দুই পরিবর্তন নিয়ে মাঠে বাংলাদেশ


টস জেতার পর লিটন জানান, উইকেট নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে দেখা গেছে যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল সুবিধা পেয়েছে। তাই জয়ের লক্ষ্যেই ফিল্ডিং বেছে নিয়েছেন তিনি। একাদশে এসেছে দুটি পরিবর্তন, রিশাদ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহানের জায়গায় ফিরেছেন শরীফুল ইসলাম ও শেখ মাহেদী হাসান।


অন্যদিকে লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা জানিয়েছেন, সুযোগ পেলে তারাও আগে ফিল্ডিং নিতেন। তবে ব্যাটিং নিয়েই খুশি তিনি। কারণ, পিচটা ব্যবহৃত হলেও ব্যাটিংয়ের জন্য খারাপ নয়। তাই একই একাদশ নিয়েই নামছে শ্রীলঙ্কা।


দুবাইতে বাংলাদেশের রেকর্ড খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। এখন পর্যন্ত চারটি টি–টোয়েন্টি খেলে দুটিতে জয়, দুটিতে হার। জয় দুটি এসেছে ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজে। এই ভেন্যুতেই প্রথমবার খেলা হয়েছিল ২০২১ বিশ্বকাপে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারে বাংলাদেশ। এরপর গত এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার কাছে দুই উইকেটে হারের স্মৃতিও রয়েছে। ওয়ানডেতে রেকর্ড আরও খারাপ, চার ম্যাচে মাত্র একটি জয়, সেটিও ২০১৮ এশিয়া কাপে লঙ্কানদের বিপক্ষে।


তবে পরিসংখ্যান নয়, বাংলাদেশ চাইবে আজকের ম্যাচে নতুন ইতিহাস লিখতে। লিটন-তানজিদের ব্যাটিং, মাহেদী-নাসুমের স্পিন কিংবা তাসকিন-শরীফুল-মুস্তাফিজের পেস আক্রমণ, সবকিছু মিলে আজকের লড়াইয়ে সমর্থকদের চোখ থাকবে বাংলাদেশ দলের উপরেই।


বাংলাদেশ একাদশ: সাইফ হাসান, তানজিদ হাসান, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলি, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।


শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস (উইকেটকিপার), কামিল মিশারা, কুশল পেরেরা, চরিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), কামিন্দু মেন্ডিস, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গা, দুনীত ওয়েলালাগে, দুশমান্থ চামিরা, নুয়ান থুসারা।

 

টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ


সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে টসে জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। এবারের এশিয়া কাপের দুদলের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সে ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জেতে ৬ উইকেটে।