এশিয়া কাপ : সুপার ফোরের দৌড়ে টিকে রইল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৯:১৬

আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৪:১২

শেয়ার

এশিয়া কাপ : সুপার ফোরের দৌড়ে টিকে রইল বাংলাদেশ
সতীর্থদের সঙ্গে উইকেট শিকারের উদযাপনে মত্ত নাসুম। ছবি: সংগৃহীত।

সুপার ফোরের দৌড়ে টিকে রইল বাংলাদেশ

 

মরিয়া লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে সুপার ফোরে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমানের করা শেষ ওভারের শেষ বলে নুর আহমেদকে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচে ফেরাতেই আফগানদের ইনিংস শেষ হয় ১৪৬ রানে।


এই জয়ে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে টপকে আপাতত দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে দলটি। তবে নেট রান রেটে শ্রীলঙ্কা অনেক এগিয়ে আছে—তাদের রান রেট ‍+১.৫৪৬, আর বাংলাদেশের –০.২৭০।


এখন বাংলাদেশের ভাগ্য অনেকটাই শ্রীলঙ্কার হাতে। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানকে হারালেই সুপার ফোর নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। ম্যাচটি যদি পরিত্যক্তও হয়, তাহলেও বাংলাদেশের পথ খুলবে। তবে আফগানিস্তান জিততে পারলে তারা চলে যাবে পরের রাউন্ডে।


সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে নির্ধারণ হবে নেট রান রেটে। শ্রীলঙ্কা যদি শেষ ম্যাচে পরে ব্যাট করে ৭০–৭৫ রানে হারে, কিংবা আফগানরা যদি ১১–১২ ওভারের মধ্যে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে, তখনই শ্রীলঙ্কার ওপরে থেকে জায়গা করে নিতে পারবে বাংলাদেশ।


সংক্ষিপ্ত স্কোর


বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৪/৫ (তানজিদ ৫২, সাইফ ৩০, হৃদয় ২৬, জাকের ১২*, নুরুল ১২*, শামীম ১১; নুর ২/২৩, রশিদ ২/২৬)।


আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৬ (গুরবাজ ৩৫, ওমরজাই ৩০, রশিদ ২০, নাইব ১৬; মোস্তাফিজ ৩/২৮, নাসুম ২/১১, রশিদ ২/১৮, তাসকিন ২/৩৪)।


ফল: বাংলাদেশ ৮ রানে জয়ী। 
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাসুম আহমেদ।

 

পাওয়ারপ্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫৯ 

 

সব দল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১২ ম্যাচে সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। ১ জুন পাকিস্তানের বিপক্ষে লাহোরে তানজিদ–পারভেজ ১১০ রান যোগ করার পর আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে এসেছে প্রথম ফিফটি। গজনফরের ষষ্ঠ ওভারে এসেছে ১৯ রান, তানজিদ মেরেছেন দুটি ছক্কা।

 

আম্পায়ারের কলে তানজিদ বাঁচলেন


ফজলহক ফারুকি বল করেছেন একটি ভালো লেন্থ বল, যা প্যাডের দিকে এসে সামান্য ভিতরের দিকে ঘুরেছে। তানজিদ হাসান চেষ্টা করেছেন বলকে ক্রস লাইন ধরে মারতে, কিন্তু ইনওয়ার্ড মুভমেন্টের কাছে হার মানতে হয়েছে।


ফারুকি দীর্ঘ সময় ধরে আপিল করেন, কিন্তু আম্পায়ার সেটি ফিরিয়ে দেন। এরপর রশিদ সিদ্ধান্ত নেন বলটি উপরের ডেকশনে পাঠাতে। আল্ট্রা এজ নিশ্চিত করেছে যে ব্যাট স্পর্শ করেনি। বল ট্র্যাকিং অনুযায়ী, বল অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে এবং ইমপ্যাক্ট লাইনে, সামান্য মাইডল লেগের উপরে।

 

এই যাত্রায় সাইফ হাসানের রক্ষা 

 

একাদশে ফেরার ম্যাচে শূন্য রানে আউট হতে পারতেন সাইফ হাসান। ফজলহক ফারুকির লফটেড ড্রাইভে কাভার অঞ্চলে দাঁড়িয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ক্যাচ ধরতে পারেননি। যদিও রেগুলেশন ক্যাচ ছিল না, কঠিন সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে তিন রান বাঁচিয়েছেন তিনি। দুই ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৮ রান।

 

বাংলাদেশের ব্যাটিং বনাম আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণ


আজকের ম্যাচের সবচেয়ে বড় লড়াই হবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এবং আফগানিস্তানের স্পিন জাদুকরদের মধ্যে। বিশেষ করে নজর কাড়তে পারে আফগানদের সবচেয়ে কম বয়সী স্পিনার – এএম গাজানফার।


মাত্র ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০২৪ সালে অভিষেকের পর থেকেই তিন ফরম্যাটেই দারুণ ছাপ রেখেছেন এই রহস্যময় স্পিনার। নাগরাজ গোল্লাপুদি-এর প্রোফাইল অনুযায়ী, গাজানফারের আত্মবিশ্বাস সত্যিই অবিশ্বাস্য।


অন্যদিকে আফগান কোচ জোনাথন ট্রটও হাস্যরসের সঙ্গে স্বীকার করেছেন, তাদের স্পিনারদের ভাণ্ডারে এত ভিন্নধর্মী এবং বিপজ্জনক স্পিনার থাকা দলের জন্য এক বিশাল সুবিধা।


আজকের ম্যাচ তাই হবে স্পিন বনাম পাওয়ার হিটিংয়ের দ্বন্দ্ব - যেখানে বাংলাদেশের ব্যাটিং সামর্থ্য এবং আফগান স্পিনারদের চালাকি খেলা উভয়ই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

 

বাংলাদেশ খেলছে ২০০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি


নবম দল হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০০তম ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান, যারা খেলেছে ২৭৪টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।

 

তিন পরিবর্তন নিয়ে আফগানদের মুখোমুখি টাইগাররা 


শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় ব্যবধানের হারের পর বাংলাদেশ দল তিনটি পরিবর্তন এনেছে। একাদশে জায়গা হারিয়েছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন, অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব ও পেসার শরিফুল ইসলাম। এক ম্যাচ পর দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ, পাশাপাশি আসরে প্রথমবার খেলছেন নাসুম আহমেদ ও সাইফ হাসান।

 

একনজরে দুই দলের একাদশ


বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তানজিদ তামিম, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, নাসুম আহমেদ, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ।


আফগানিস্তান একাদশ: সেদিকউল্লাহ আতাল, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইবরাহিম জাদরান, মোহাম্মদ নবী, গুলবাদিন নাইব, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, করিম জানাত, রশিদ খান (অধিনায়ক), নূর আহমেদ, এএম গাজানফার, ফজলহক ফারুকি।

 

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ


কয়েন নিক্ষেপ করেন রশিদ খান; হেডস ডাকেন লিটন কুমার দাস, যা তার পক্ষেই আসে। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লিটন। বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করছেন, কিছুটা মন্থর উইকেট হলেও ১৬০ রান জয় জন্য যথেষ্ট। আফগান অধিনায়কও বলেছেন, টস জিতলে তিনি আগে ব্যাট করতেন, তবে পরে ব্যাট করতেও তাদের সমস্যা নেই।

 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে পিছিয়ে বাংলাদেশ


এখন পর্যন্ত ১২ বার মুখোমুখি লড়াইয়ে ৭টিতে জিতেছে আফগানিস্তান, জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ৫ ম্যাচে। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে আফগানদের জয়, দুইটিতে বাংলাদেশের। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও মাত্র ১১৫ রানের লক্ষ্য নিয়েও জিতেছিল আফগানিস্তান।

 

দেশের বাইরে জয়বিহীন বাংলাদেশ


আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দেশের বাইরে এখন পর্যন্ত কোনো জয় পায়নি বাংলাদেশ। দেশের মাঠে খেলা ৭ ম্যাচের ৫টিই জিতেছে তারা।


আর দেশের বাইরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫ ম্যাচ খেলে সবকটিই হেরেছে বাংলাদেশ।