পরিচালক পদে লড়বেন তামিম, ক্রিকেট উন্নয়নে যা করবেন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট, ২০২৫ ১৩:৩০

শেয়ার

পরিচালক পদে লড়বেন তামিম, ক্রিকেট উন্নয়নে যা করবেন
বিসিবি পরিচালক পদে লড়বেন তামিম ইকবাল খান। ছবি: সংগৃহীত।

ক্রিকেট মাঠে দেশের সেরা ওপেনারদের একজন হিসেবে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আলো ছড়ানো তামিম ইকবাল এবার নাম লেখাচ্ছেন প্রশাসনিক অঙ্গনে। বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে পরিচালক পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে মাঠের বাইরের লড়াইয়েই দেখা যাবে চট্টগ্রামের এই ক্রিকেটারকে। ক্রিকেটার থেকে প্রশাসক হয়ে ওঠার যাত্রা শুরু করতে চলেছেন তামিম।

 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তামিম জানিয়েছেন, ক্রিকেটকে উন্নত করার স্বপ্নই তাঁকে নির্বাচনে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তাঁর ভাষায়, “নির্বাচনে আলোচনাটা হওয়া উচিত, ক্রিকেটের জন্য কে বেশি উপযুক্ত। কিন্তু এখানে দেখা যায়, একজন আরেকজনকে নিয়ে বাজে প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ ক্রিকেটারদের স্বার্থ, উন্নয়নের পরিকল্পনা, এসব নিয়ে কথা বলা হচ্ছে না।”

 

তামিম বিশ্বাস করেন, বোর্ড পরিচালনায় আধুনিক চিন্তাভাবনার অভাবই ক্রিকেটের বড় অন্তরায়। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনে জিততে পারলে তিনি চার বছরের মেয়াদে মাত্র দুই-তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজেই মনোযোগ দেবেন। তাঁর মতে, একসঙ্গে সবকিছু করতে গিয়ে কোনো ক্ষেত্রেই উন্নতি হয় না। সবচেয়ে জরুরি হলো ক্রিকেটারদের জন্য সঠিক অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা।

 

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট বোর্ড হলেও এখনো মাঠ ও অনুশীলনের জায়গায় ভয়াবহ সংকট রয়েছে, এ অভিযোগ তুলেছেন তামিম। “বিপিএল কিংবা ডিপিএলের সময় দেখা যায়, একটি মাঠে সাতটি দল অনুশীলন করছে। অথচ ইংলিশ কাউন্টির এক ক্লাবের মতো সুবিধাও নেই আমাদের। সেখানেই পিছিয়ে পড়ছি আমরা।”

 

সেই ঘাটতি মেটাতে তামিমের পরিকল্পনা হলো একটি ‘ক্রিকেট ফ্যাক্টরি’ গড়ে তোলা। তাঁর মতে, ব্যবসার দোকান চালাতে হলে যেমন ফ্যাক্টরি লাগে, ক্রিকেটেও খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য একটি ব্যবস্থা থাকা জরুরি। তিনি চান, নতুন স্টেডিয়াম বানানোর চেয়ে বিদ্যমান মাঠগুলো সংস্কার ও উন্নত করা হোক। পাশাপাশি ভারতের বেঙ্গালুরুর এক্সিলেন্স সেন্টারের মতো কেন্দ্র তৈরি করাকে তিনি অপরিহার্য বলে মনে করছেন।

 

আরেকটি বড় পরিকল্পনা তাঁর স্কুল ক্রিকেটকে ঘিরে। তামিম মনে করেন, স্কুল ক্রিকেট শক্তিশালী না হলে দেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতে টিকে থাকতে পারবে না। ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার উদাহরণ টেনে তিনি বলেছেন, “ওই সব দেশে স্কুল ক্রিকেট থেকেই খেলোয়াড় বের হয়। আমাদেরও স্কুল ক্রিকেটকে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের মতো সিরিয়াস করতে হবে। তখন নতুন প্রতিভা বের হয়ে আসবে।”

 

ভবিষ্যতে বিসিবি সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেননি তামিম। তবে আপাতত পরিচালক হিসেবেই শুরু করতে চান তিনি। “প্রথমে কাজ শেখার সুযোগ চাই। তবে বোর্ডে এলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো ক্ষমতাও থাকা জরুরি,” বলেন তিনি।

 

২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন তামিম ইকবাল। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনও ব্যাট হাতে দেখা যায় তাঁকে। একসময় মাঠে ব্যাট ঘুরিয়ে প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দেওয়া তামিম এবার ভোটযুদ্ধে নামবেন ভিন্ন ভূমিকায়। মাঠের সফলতার মতোই বিসিবির নির্বাচনী মঞ্চে কি সফল হবেন তিনি, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা।