দেশি দক্ষ কিউরেটর রেখে বিদেশি আনায় ক্ষুব্ধ পাইলট

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৫৭

আপডেট: ১৪ আগস্ট, ২০২৫ ১২:২২

শেয়ার

দেশি দক্ষ কিউরেটর রেখে বিদেশি আনায় ক্ষুব্ধ পাইলট
দেশি কিউরেটর রেখে চড়া পারিশ্রমিকে বিদেশি কিউরেটর আনায় ক্ষুব্ধ খালেদ মাসুদ পাইলট। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন করে বিদেশি কিউরেটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ও জাতীয় দলের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার খালেদ মাসুদ পাইলট। তার মতে, দক্ষ স্থানীয় কিউরেটরদের উপেক্ষা করে কোটি টাকার বিনিময়ে বিদেশি নিয়োগ দেওয়া শুধু অর্থের অপচয় নয়, বরং দেশের ক্রিকেট অবকাঠামো উন্নয়নের পথে বড় বাধা।

 

সম্প্রতি বিসিবি অস্ট্রেলিয়ার টনি হেমিংকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কিউরেটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তেই আপত্তি তুলেছেন পাইলট। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, এর আগে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিদেশি কিউরেটর থাকলেও বাংলাদেশের পিচ ও আউটফিল্ডের মানে তেমন কোনো উন্নতি আসেনি।

 

পাইলট বলেন, “আমাদের দেশেই দক্ষ কিউরেটর আছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি আনার কোনো দরকার নেই। ১৫ বছর বিদেশি ছিল, কিন্তু পিচ ভালো হয়নি। এখন আবার নতুন একজন এসেছে, হয়তো ভালো কাজ করবেন, তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এক জনের জন্য কয়েক কোটি টাকা কেন খরচ করব?”

 

তিনি অভিযোগ করেন, বিদেশি নিয়োগের পেছনে কমিশন লেনদেনের বিষয় থাকে, যা স্থানীয়দের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। “বেশিরভাগ বিদেশি আসে কমিশনের জন্য। এজেন্ট থাকে, কমিশন যায়-আসে। ১৫ বছরে কত কোটি টাকা বাইরে চলে গেছে? আমাদের ক্রিকেটে এর লাভ কী হয়েছে?” প্রশ্ন তোলেন পাইলট।

 

পাইলট উদাহরণ টেনে বলেন, “বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, ফতুল্লায় স্থানীয় কিউরেটররা দুর্দান্ত পিচ বানিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মিরপুরে ভালো পিচ বানানো সম্ভব। এতে দেশীয় জনশক্তিরও কর্মসংস্থান হবে।”

 

বেতন কাঠামো নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তার দাবি, নতুন কিউরেটরকে বছরে প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা (মাসে প্রায় ১০ লাখ) দেওয়া হবে, যা মাত্র একটি মাঠের জন্য অযৌক্তিক। “এক জনের জন্য ১০ লাখ টাকা মাসে কেন? আমাদের দেশীয় কিউরেটর হলে খরচও কম হত, কাজও ভালো হত,” বলেন পাইলট। তিনি আরও যোগ করেন, “আমি ১০ বছর আগে বলেছি, কালো মাটি বদলাতে হবে। শুধু মাটি বদলালেই পিচের মান উন্নত হবে। কিন্তু কেউ শোনেনি।”

 

পাইলটের এই বক্তব্যে নতুন করে বিসিবির নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, দেশের মাটিতে দীর্ঘমেয়াদি পিচ উন্নয়নের জন্য স্থানীয় কিউরেটরদের প্রশিক্ষণ ও সুযোগ দেওয়াই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।