শিরোনাম

বিসিবি দিচ্ছে কোটি টাকা, টনি হেমিংয়ের নতুন দায়িত্ব। ছবি: সংগৃহীত।
ক্রিকেট মাঠের দেখভালে বাংলাদেশে ফিরে এলেন অস্ট্রেলিয়ার স্বনামন্য কিউরেটর টনি হেমিং। এক সময় বোঝাপড়ার অভাব আর ব্যক্তিগত মতভেদের কারণে পাকিস্তানে চলে যাওয়া এই বিশেষজ্ঞ এবার বিসিবির বড় বিনিয়োগে নতুন দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করেছেন।
বিসিবি সূত্রের খবর, হেমিংকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ‘উইং টার্ফ ম্যানেজমেন্ট’ বিভাগের প্রধান হিসেবে। তার দুই বছরের চুক্তির মাসিক পারিশ্রমিক দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার মার্কিন ডলার, যা প্রায় ১০ লাখ টাকা। এটি দেশের সর্বোচ্চ গ্রাউন্ড কিউরেটরের বেতনের দ্বিগুণেরও বেশি। উদাহরণস্বরূপ, গামিনি ডি সিলভাকে মাসিক দেওয়া হয় ৪৫০০ ডলার, প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা।
অর্থের পাশাপাশি বিসিবি তাকে দেয় অনেক সুবিধা। গুলশান-২ এলাকায় ফার্নিশড ফ্ল্যাট, মাসে ৩ হাজার টাকা মোবাইল বিল, বছরে বিমানে যাতায়াতের জন্য ৫ হাজার ডলারের ভাতা সব মিলিয়ে বিসিবি একদম বড়সড় অঙ্কের প্যাকেজ দিয়েছে।
টনি হেমিং ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এসে কাজ শুরু করেছেন। মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দেখা গেছে তাকে, মাঠের চারপাশে গ্রাউন্ডসম্যানদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন এবং কাজের পরিস্থিতি যাচাই করছেন।
টনি হেমিং এর আগে পাকিস্তানে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সময় দুর্দান্ত উইকেট তৈরি করে প্রশংসার ঝড় তুলেছিলেন। বিসিবি তার সেই সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই তাকে ফেরত নিয়েছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেট মাঠের মান উন্নয়নের জন্য এমন অভিজ্ঞ কিউরেটরের তৎপরতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিসিবি। তারা আশা করছে, হেমিংয়ের দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা দেশের মাঠগুলোকে আরও উন্নত করবে।
এর আগে হেমিং পাকিস্তানের কিউরেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন, যেখানে তার পেশাদারিত্বের প্রশংসা হয়েছে ব্যাপক। তবে বিসিবি তার পুরনো দুঃসময়ের ভুলগুলো ভুলে নতুনভাবে তাকে সুযোগ দিচ্ছে।
দেশের ক্রিকেট পরিবেশে এমন বৈশ্বিক মানের টেকনিশিয়ান থাকা একটি বড় প্রাপ্তি। ১০ কোটি টাকার মত বিনিয়োগ করে বিসিবি এই পদক্ষেপ নিয়েছে যাতে বোলিং উইকেট থেকে শুরু করে পিচ প্রস্তুতির প্রতিটি দিকেই উন্নতি করা যায়।
পরবর্তীতে এই কাজে স্থানীয় কিউরেটরদের প্রশিক্ষণ দেওয়াও হবে হেমিংয়ের অন্যতম দায়িত্ব। বিসিবি চায় দীর্ঘমেয়াদে নিজস্ব দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা হোক।
এই পদক্ষেপ নিয়ে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেউ বলছেন, আন্তর্জাতিক মানের একজন পেশাদার আসায় মাঠের গুণগত মান দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। আবার কেউ অনেকে মনে করছেন, অতিরিক্ত ব্যয়বহুল এই প্যাকেজ কি যথাযথ সিদ্ধান্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
তবুও, বর্তমান অবস্থায় দেশের মাঠ ও কিউরেটর বিভাগকে আধুনিকায়নের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। আশা করা হচ্ছে, টনি হেমিংয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট মাঠ নতুন দিগন্ত স্পর্শ করবে।
আরও পড়ুন: