২০২৫-২৭ সালের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসরের সূচনা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার গলে শুরু হবে এই ঐতিহাসিক সিরিজ, যার মধ্য দিয়েই নতুন চক্রে পথচলা শুরু করবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ২৫ জুন কলম্বোতে হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ। ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই সংস্করণে বাংলাদেশের শুরুটা হয়তো কখনোই খুব উজ্জ্বল ছিল না, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতির ছাপ রেখেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো জয় না থাকলেও দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) নিউ জিল্যান্ডে ঐতিহাসিক মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ের স্মৃতি ছিল। এরপর তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) যেন একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ছিল বাংলাদেশ। ১২ ম্যাচের সেই সময়ে চারটি জয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চমক ছিল পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাই করা। পয়েন্ট টেবিলে সপ্তম স্থানে থেকে শেষ করেছিল চক্র, যেখানে নিচে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের মতো দল। সব মিলিয়ে তিনটি চক্রে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলেছে ৩১টি টেস্ট, জিতেছে মাত্র পাঁচটি, ড্র করেছে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবারের চক্রে বাংলাদেশের প্রত্যাশা তাই আগের চেয়ে একটু বেশি। সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, “গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। এবার লক্ষ্য থাকবে আরও একটি-দুটি ম্যাচ বেশি জেতার।” এই আশাবাদ তার দলের মধ্যে একটি ইতিবাচক মানসিকতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এবারও অংশ নিচ্ছে আগের মতোই ৯টি দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি ঘরের মাঠে, তিনটি বিদেশে। পয়েন্ট ব্যবস্থাও অপরিবর্তিত রয়েছে। ফাইনাল হবে ২০২৭ সালের জুনে, প্রস্তাবিত ভেন্যু লর্ডস।
বাংলাদেশ এবার খেলবে সবচেয়ে কম সংখ্যক, মাত্র ১২টি টেস্ট—যত ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কাও। এর মধ্যে ২০২৫ সালে রয়েছে কেবল একটি সিরিজ, চলতি শ্রীলঙ্কা সফর। পরবর্তী পাঁচ সিরিজ হবে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। আগামী বছরই বড় পরীক্ষা অপেক্ষা করছে দলের জন্য: মার্চে ঘরের মাঠে পাকিস্তান, আগস্টে বহু প্রতীক্ষিত অস্ট্রেলিয়া সফর (২০০৩ সালের পর প্রথমবার), অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর এবং ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজ।
সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ক তথ্য হলো, এবারের চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের সঙ্গে খেলবে, তাদের মধ্যে চার দলের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে বাংলাদেশ অপরাজিত ছিল। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সিরিজ ড্র, পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়েই এবার নতুন যাত্রা শুরু করছে নাজমুল-তাইজুলরা। যদিও শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে আগের সিরিজ হেরেছিল দল, তবে সাম্প্রতিক ফর্ম ও উন্নত মনোভাবকে পুঁজি করে টেস্ট ক্রিকেটে এক নতুন অধ্যায়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:
