মিরাজের নতুন মিশন: ধ্বংসস্তূপ থেকে ওয়ানডে দল গড়ার অঙ্গীকার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ জুন, ২০২৫ ১৫:২৭

আপডেট: ১৩ জুন, ২০২৫ ১৫:৪১

শেয়ার

মিরাজের নতুন মিশন: ধ্বংসস্তূপ থেকে ওয়ানডে দল গড়ার অঙ্গীকার
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের একসময়কার গর্বের ফরম্যাট ওয়ানডে ক্রিকেট এখন কেবলই হতাশার প্রতিচ্ছবি। বিশ্বকাপ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ—সবখানেই যেন শুধুই ব্যর্থতা। এমন ভঙ্গুর সময়ে এক বছরের জন্য ওয়ানডে দলের হাল ধরলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আপাতত লক্ষ্য ২১টি ওয়ানডে ম্যাচে দলকে একটা ‘স্থির ঠিকানা’য় পৌঁছে দেওয়া।


গত বিশ্বকাপে মাত্র দুই জয়, চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শূন্যতা, সর্বশেষ ১৩ ম্যাচে মাত্র ৪ জয়—সব মিলিয়ে ২০২৩ সালের পর থেকে ৪৩ ম্যাচে জিতেছে মাত্র ১৪টি। সেই ফলাফলের প্রতিফলন পড়েছে র‍্যাঙ্কিংয়েও—২০০৬ সালের পর এবারই প্রথম ১০ নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ। এই নাজুক বাস্তবতায় ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম পূর্ণ মেয়াদ শুরু করলেন ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।


প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতৃত্বের প্রসঙ্গে মিরাজ বললেন, আপাতত এক বছরেই ফোকাস রাখতে চান। দল যখন খাদের কিনারায়, তখন দূর ভবিষ্যৎ নয়—এখনই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই গুরুত্বপূর্ণ। বললেন, “যেহেতু দল সংগ্রাম করছে, বোর্ড হয়তো এক বছরে একটা জায়গায় দাঁড় করাতেই ভাবছে।”


তার ভাষ্য অনুযায়ী, অবসর নেওয়া মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর জায়গায় যারা আসবেন, তাদেরকে এক বছরের মধ্যেই চিহ্নিত করে সেট করা দরকার।


মিরাজের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল মাশরাফির অধিনায়কত্বে। এরপর খেলেছেন সাকিব, তামিম, শান্তসহ নানা অধিনায়কের অধীনে। তাদের নেতৃত্বের স্টাইল, বিশেষ করে কঠিন সময়ের কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দৃষ্টান্ত, নিজের অধিনায়কত্বে কাজে লাগাতে চান।


“অনেক সময় শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেটা আমি সিনিয়রদের কাছ থেকে শিখেছি।”


আগেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি—আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে। সেখান থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগাতে চান স্থায়ী দায়িত্বে।


দল এখন নবীন-প্রবীণের মিশেলে তৈরি হচ্ছে। মিরাজ জানেন, জুনিয়ররা অনেক কিছুই শিখছে তাদের কাছ থেকে। সে কারণে ড্রেসিংরুমে নিরাপদ ও সহনশীল পরিবেশ গড়ে তোলার কথাও বললেন তিনি।


“যেভাবে বড় ভাইয়েরা আমাদের আগলে রেখেছেন, আমিও তেমনটাই করতে চাই জুনিয়রদের জন্য।”


বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের সামনে এখন শুধুই উতরাই পথ। পারফরম্যান্স, আত্মবিশ্বাস আর নেতৃত্ব—সবকিছুই যেন তলানিতে। এই কঠিন সময়েই মিরাজ পেলেন দলের হাল ধরার দায়িত্ব। সামনে ২১ ম্যাচ, লক্ষ্য—একটা দল গড়া, একটা বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা।


শুরুটা শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে, কিন্তু মিরাজের নতুন অধ্যায়ের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—এতসব অন্ধকারের মধ্যেও কি তিনি খুঁজে পাবেন সম্ভাবনার আলো?