লর্ডসে পেসারদের দ্বৈরথ, ২১৮ রানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ জুন, ২০২৫ ০০:৪৮

শেয়ার

লর্ডসে পেসারদের দ্বৈরথ, ২১৮ রানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া
দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ে রাখতে দারুণ বোলিং করছেন এনগিডি-রাবাদারা। ছবি: রয়টার্স

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল যেন রূপ নিয়েছে দুই দলের পেসারদের জমজমাট লড়াইয়ে। লর্ডসের ঐতিহাসিক ভেন্যুতে প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও আগুন ঝরিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলাররা। টানা দুই দিন লর্ডসের গ্যালারিভর্তি দর্শকরা প্রত্যক্ষ করেছেন মোট ২৮ ব্যাটসম্যানের সাজঘরে ফেরার দৃশ্য। ব্যাটারদের অসহায় আত্মসমর্পণের এই ম্যাচে দ্বিতীয় দিন শেষে ২১৮ রানের লিড নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, যদিও তাদের হাতে বাকি আছে কেবল ২ উইকেট।


প্রথম ইনিংসে ২১২ রানে অলআউট হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ১৩৮ রানে গুটিয়ে দেয় শিরোপাধারীরা। এই ধ্বংসযজ্ঞের মূল কারিগর ছিলেন প্যাট কামিন্স। অসাধারণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ২৮ রানে নেন ৬ উইকেট, যা লর্ডসে কোনো অধিনায়কের সেরা বোলিং ফিগার। একইসঙ্গে তিনি হয়ে যান টেস্ট ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ পেসার ও অষ্টম বোলার যিনি ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। অধিনায়ক হিসেবে এটা তার নবম পাঁচ উইকেট, যেখানে তার ওপরে আছেন শুধু পাকিস্তানের কিংবদন্তি ইমরান খান।


তবে কামিন্সের আগুনের জবাব দিতে দেরি করেননি কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডি। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৭৩ রানেই তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার ৭টি উইকেট। ৪ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন বাভুমা ও বেডিংহ্যাম। একসময় ৬৪ রানের জুটি গড়লেও পানি বিরতির পর কামিন্স আবার ঝাঁপিয়ে পড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়ারা মাত্র ১৭ রানে হারায় শেষ ৫ উইকেট, যার ৪টি তুলে নেন কামিন্স নিজেই।


প্রথম ইনিংসেই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে লড়াই করেন টেম্বা বাভুমা ও ডেভিড বেডিংহ্যাম। বাভুমা ৮৪ বলে ৩৬ ও বেডিংহ্যাম ৬ চারে ১১১ বলে ৪৫ রান করেন। তবে এই ইনিংসেও কামিন্সের দাপটের সামনে তারা টিকতে পারেননি।


অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুর দিকে ভালোভাবেই খেলছিলেন লাবুশেন ও খাওয়াজা। কিন্তু রাবাদা ও এনগিডির তোপে দ্রুত ভেঙে পড়ে তাদের মিডল অর্ডার। মাত্র ৭৩ রানেই তারা হারায় ৭টি উইকেট। তবে এরপর দলের হাল ধরেন অ্যালেক্স কেয়ারি ও মিচেল স্টার্ক। ভাগ্যের সহায়তায় বেশ কয়েকবার বেঁচে যান দুজনেই। এক পর্যায়ে তারা গড়েন ৬১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি, যা দুইশর ওপর লিড এনে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে।


দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ৪৩ রান করে এলবিডব্লিউ হন কেয়ারি। রিভিউ নিলেও ‘আম্পায়ার্স কল’ থাকায় তাকে ফিরতে হয়। স্টার্ক ৪৭ বলে ১৬ রানে অপরাজিত আছেন, তার সঙ্গে রয়েছেন ন্যাথান লায়ন। যদিও স্টার্ককেও আউট করার সুযোগ পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা, কিন্তু ক্যাচ ছাড়ার মিছিলে তারা সেই সম্ভাবনা নষ্ট করে। এখন তৃতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে অপেক্ষা করছে বিশাল চ্যালেঞ্জ—একটি টেস্ট ফাইনাল জেতার চেয়েও কঠিন, ২০০ রানের বেশি লিড তাড়া করে ইতিহাস গড়ার লড়াই।